ঝরা কলির গল্প
মেহেদী হাসান বাবু
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১৯
কে রাখে কার খবর! শুভ। সুব্রত কুমার (শুভ)। ঝড়ে ঝরে যাওয়া এক কলির গল্প। বছরের শুরুতে হাজার শিশু যেখানে নতুন বইয়ের সুবাস নিচ্ছে, তখন শুভ কনকনে শীতে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে কাস্টমারদের পানি আর চা পৌঁছে দিতেই ব্যস্ত। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় যেখানে বই হাতে থাকার কথা, দারিদ্রতকর কষাঘাতে তা আর হয়ে উঠছে না।
নাটোরের সিংড়া পৌরসভার সামনে ইলিয়াসের চায়ের দোকানে তিন হাজার টাকা মাসিক বেতনে এক বছর যাবৎ কাজ করে শ্রী সুব্রত কর্মকার (শুভ)। বয়স আনুমানিক ১৪ বছর হবে।
ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর সংসারের অভাব-অনটনের কারণে বিদ্যালয়ে যাওয়া আর হয়ে ওঠেনি। নিজ গ্রামে একটি সংঘাতে শুভর বাবার হাত ভেঙে যায়। অন্যের জমিতে আর বাড়িতে দিনমুজুর খেটে রোজগার করে চালাতেন সংসার। অপরের সাহায্য-সহযোগিতায় চিকিৎসা সম্পন্ন হলেও পূর্ণাঙ্গভাবে তিনি কর্মহীন হয়ে পড়েন।
এরপর দারুণ অর্থকষ্টে পড়ে যায় শুভর পরিবার। সংসারের হাল ধরে শুভ এবং শুভর মা। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন, আর শুভ আয়ের জন্য বেছে নিয়েছে চা দোকানের বয়ের কাজ।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৩ নং ইটালি ইউনিয়নের রাতাল গ্রামের শ্রী লব কুমারের ঘরে জন্ম এই শুভর। মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্য তারা ছয়জন। পরিবারের হাল ধরতে নিজ গ্রামে এক বছর এবং সিংড়া পৌরসভার সামনে ইলিয়াসের দোকানে এক বছর যাবৎ চাকরি করে মাইনে মাত্র তিন হাজার টাকায়।
দোকানি ইলিয়াস আলী বলেন, শুভ খুব গরিব পরিবারের একটা ছেলে। তার বাবার হাত ভেঙে যায়। পরিবারটা খুব অসহায় হয়ে পরে। পরে শুভকে বলি আমার দোকানে থাকার কথা। আমি তাকে সন্তানের মতোই রাখতে চেষ্টা করি। তবে তার পরিবারে লোক সংখ্যা বেশি এবং খুব অভাবি।
সরকার ও বৃত্তবানরা এসব ঝরে যাওয়া কলিদের দিকে নজর দেবেন বলে প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে