ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

চা চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে পঞ্চগড়

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৪

চা চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে পঞ্চগড়
ছবি- প্রতিনিধি

দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে চা চাষে সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে। ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় ১০ হাজার ১৭০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। ৩১০টি ক্ষুদ্র চা বাগান থেকে ১ কোটি তিন লাখ, অর্থাৎ ১০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। এটি লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়েছে এবং করোনাকালীন সময়েও সর্বোচ্চ রেকর্ড বলে জানিয়েছেন পঞ্চগড় চা বোর্ড।

রোববার দুপুরে পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড জানায়, চলতি মৌসুমে স্থানীয় চা বাগান থেকে ৫ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ কাঁচা চা পাতা তোলা হয়েছিলো। পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাও জেলার আওতায় চলমান ১৮টি চা কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে এ বছর ২০২১ সালে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে, যা মোট জাতীয় উৎপাদনের ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ।

চা বোর্ড আরও জানিয়েছে, ২০১৯ সালে এ অঞ্চলে চা উৎপাদনে জমির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৬৮০ দশমিক ৮৬ একর এবং কাঁচা চা পাতা উৎপাদন হয়েছিল ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার কেজি। সেই তুলনায় ২০২০ সালে ১ হাজার ৪৮৯ দশমিক ৮৯ একর জমির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ লাখ ১১ হাজার কেজিতে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জাহিরুল ইসলাম জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সকল চা বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিলো। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, সঠিক সময়ে ভর্তুকিমূল্যে সার বিতরণ, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, রেশন এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ফলে ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে উৎপাদনের ধারাবাহিকতা থেকে বুঝতে পারা যায় যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের চা শিল্প উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ধরে রাখা সম্ভব্য।

উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র চা চাষিদের ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলের মাধ্যমে চা চাষ বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের ফলে সমতলের চা ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে এ বছর উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডেও উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, সমতল ভূমিতে চা চাষের বিপ্লব ঘটিয়েছে পঞ্চগড়। ১৯৯৬ সালে সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সর্বপ্রথম চা চাষের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছিল। ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। বর্তমানে এ অঞ্চলগুলো দেশের দ্বিতীয় চা অঞ্চলে পরিণত হয়।

তিনি আরও বলেন, চা চাষ সম্প্রসারণে চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে কর্মশালা হচ্ছে। চাষিদের সমস্যা সমাধানে 'দুটি পাতা একট কুড়ি' নামে একটি মোবাইল এপস চালুসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে এশটি পোস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে যেখানে সমস্যা সমাধান, রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেয়া হবে।

শামীম আল মামুন আরও জানান, এ বছর ক্ষুদ্র চাষিরা কাঁচা চা পাতার ন্যায্য দাম পাওয়ার উৎসাহিত হয়েছে। নতুন চা চাষিদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এতে এ অঞ্চলের মানুষের যেমন দারিদ্র বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে, তেমনি সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত