ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

শোকে কাতর মা, একমাত্র সন্তান তানবীরকে খোঁজেন বাবা

  হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৪৪

শোকে কাতর মা, একমাত্র সন্তান তানবীরকে খোঁজেন বাবা
ছবি: সংগৃহীত

একমাত্র ছেলেকে নিয়ে স্বপ্নে বিভোর ছিলেন পিতা-মাতা। কিন্তু মুক্তিপণের টাকা কেড়ে নেয় তানবীরের জীবন। তানবীর আর বড় হতে পারেনি। ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া অবস্থায় নিষ্ঠুর মানুষের লোভের বলি হলো সে। আর তার মৃত্যুর মধ্যদিয়ে নিভে গেলো তাদের পরিবারের আলোর মশাল। তাইতো শোকে কাতর নিহত তানবীরের বাবা-মা।

তানবীরের মৃত্যুর পর থেকে শোকে কাতর মা এখনো মুখে খাবার নেননি। আর বাবা যেন অধিক শোকে পাথর। ফেল ফেল করে চেয়ে থাকেন সবার মুখের দিকে একমাত্র ছেলে তানবীরকেই খোঁজেন!

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নছরতপুর গ্রামের স্কুল ছাত্র তানবীর। সে ছিলো বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। কিন্তু মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে খুন করা হয়। এর মধ্যদিয়ে উধাও হয়ে যায় তানবীরকে ঘিয়ে বাবা-মার স্বপ্ন। মুক্তিপণ চেয়ে না পাওয়ায় তাকে হত্যা করে একই গ্রামের ৩ যুবক।

আরো পড়ুন: শায়েস্তাগঞ্জে মুক্তিপণ না পেয়ে স্কুল‍ছাত্রকে হত্যা

নিহত স্কুল পড়ুয়া তানবীর হাজী আফরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। সে তানবীর বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা ফারুক মিয়া একজন ব্যবসায়ী মা উজ্জ্বলা বেগম গৃহিণী। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এখন তিনি মৃতপ্রায়। পুরো এলাকার বাতাস যেন শোকে ভারী হয়ে গেছে। কান্না থামাতে পারছেন না তানবীরের স্কুল হাজী আফরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহপাঠীরাও।

গত রোববার ২৪ জানুয়ারি রাত ৮টা থেকে তানবীর নিখোঁজ হয়েছিলো। ঘটনার দিন রাতেই তানবীরের নিজের মোবাইল থেকে তার বাবা ফারুক মিয়ার কাছে ফোন করে ৮০ লাখ টাকা চাওয়া হয়, না হলে ছেলেকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়া হয়।

বিষয়টি তানবীরের বাবা পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে লোকেশন বের করে। লোকেশনে দেখা যায় চুনারুঘাট থেকে ফোন করা হয়েছে। পুলিশ সন্দেহজনকভাবে ওই রাতেই নুরপুর গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে জাহেদ ও নুরপুরের মালাই মিয়ার ছেলে শান্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ঘটনার মূল হোতা মাস্টার মাইন্ড উজ্জ্বলকে মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং ওইদিনই দুপুরে তানবীরের লাশ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তানবীরকে ঘাতকরা আগেই গলায় ফাঁস ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। পরে স্থান পরিবর্তন করে টাকা চায় তানবীরের বাবার কাছে। সম্প্রতি তানবীরের বাবা বেশকিছু জায়গা বিক্রি করেছিলেন, তার বাবার ব্যাংকে টাকা আছে এই বিষয়টি একই গ্রামের ঘাতক উজ্জ্বল, শান্ত ও জাহেদ জানত। এই টাকাই কাল হয়ে নেমে আসল তানবীরের জীবনে।

এদিকে এ মামলায় গ্রেপ্তার ৩ জন এখন জেলা কারাগারে আছে। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মুক্তিপণ না পেয়ে অপহরণকারীরা ছেলেটিকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য পুকুরে ফেলে দেয়। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত