ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

উচ্ছেদ কর্মীরা ফিরে গেলেই ফের বসে দোকান

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২০:০৪

উচ্ছেদ কর্মীরা ফিরে গেলেই ফের বসে দোকান
রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের অবৈধ দোকান উচ্ছেদের পর ফের দখল। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ঘটা করে উচ্ছেদ অভিযানের মাস না পেরোতেই ফের বসেছে দোকানপাট। মার্কেটের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই ডানে-বামে চোখে পড়ে অনেক দোকান। কোনটির একটিমাত্র দেয়াল রয়েছে, কোনটিতে সেটাও নেই। এসব ভাঙা দোকানে আবারও পণ্য-সামগ্রী তুলে বিক্রি করছেন দোকানিরা। আর এগুলোতে চলছে জমজমাট ব্যবসা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই দুই পাশে পড়ে থাকা উচ্ছেদের ধ্বংসস্তূপ চোখে পড়ে। দোকান ভাঙার পর ডিএসসিসি ভাঙা ভবনের বর্জ্য এখনো সরায়নি। তবে মার্কেটের পার্কিং ও পাঁচতলা বাদে নিচতলা, দোতলা, তিনতলা এবং চারতলায় ভাঙা দোকানে আবারও সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

এদিকে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এবং সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে নকশাবহির্ভূত দোকান উচ্ছেদ অভিযানকে অবৈধ বলেছেন। এই বক্তব্যকে মানহানিকর উল্লেখ করে সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তবে যেটা নিয়ে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন এবং বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের মধ্যে এতো কথা কাটাকাটি সেই অভিযানের ফলাফল নিয়ে এখন নানা প্রশ্ন উঠেছে । কারণ মার্কেট দুটিতে আবারও সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করছেন দোকানিরা।

উচ্ছেদের পর সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের আবারও দোকান নিয়ে বসেছেন মঈন উদ্দিন। ফের দোকান বসানোর বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘আগে এখানে আমার দোকান ছিল। কিন্তু সেটা ভেঙে দিলো। আর এখান থেকে ইনকাম করে ফ্যামিলি চালাই এবং স্টাফদেরও ফ্যামিলি চলে। এখন আমরা কোথায় যাবো?’

অন্যদিকে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ গিয়েও দেখা গেল একই দৃশ্য। ডিএসসিসি নগর ভবনের পেছনের দিকে এই মার্কেটের অবস্থান।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উচ্ছেদের জায়গায় ফের বসানো হয়েছে দোকান। বেশির ভাগ দোকানের দুই পাশসহ সামনের শাটার ভাঙা। একটি মাত্র দেয়াল নিয়ে এসব দোকান বসেছে। গেঞ্জি, টুপি ও শীতের জামাসহ বিভিন্ন রকম কাপড় বিক্রি করা হচ্ছে।

উচ্ছেদের সময় তিনটি দোকান ভাঙা পড়ে সুমন নামের এক ব্যবসায়ীর। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘ফুটপাতের দোকানিরা ভাসমান। আমরা টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নিয়েও এখন ভাসমান। মার্কেট কমিটি চারতলায় কয়েকজনকে কিছু দোকান দিয়েছে। সেখানে কিছু ব্যবসায়ী বসেছেন। আমরা চাই, এখানে যে ফাঁকা দোকানগুলো আছে সেগুলো যেন আমাদের দেয়।’

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, অবৈধ দোকান থাকবে না। আমরা অভিযোগ পেয়ে লোক পাঠিয়েছি। আবার সেগুলো তুলে দেবো এবং সংস্কারও করবো। এজন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে রাজধানীর অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন। পরে দক্ষিণের মার্কেটগুলো থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদে উদ্যোগও নেন। এরই ধারাবাহিকতায় ডিএসসিসি গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ নকশাবহির্ভূত ৯১১টি দোকান উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। ১৭ ডিসেম্বর থেকে গুলিস্তান এলাকার সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে নকশাবহির্ভূত ৭৫৩টি দোকান উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত