ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

লেখক মুশতাকের লাশ হস্তান্তর, মামলা হলো অপমৃত্যুর

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:২৯

লেখক মুশতাকের লাশ হস্তান্তর, মামলা হলো অপমৃত্যুর
ছবি- প্রতিনিধি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের (৫৩) লাশ শুক্রবার দুপুরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও ময়নাতদন্ত সম্পন্নের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে লাশের ভিসেরা সংরক্ষণ করা হয়েছে।

মৃত্যুর ঘটনায় কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে গাজীপুর মহানগরের সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন।

সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ বায়েজীদ জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গাজীপুরের সহকারী কমিশনার মো. ওয়াসিম উজ্জামানের উপস্থিতিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুশতাক আহমেদের মরদেহের সুরতহাল করা হয়েছে।

এসআই বলেন, তার (মুশতাক) পিঠে আগে যে কোনো সময় হওয়া ‘ঘা’ এর দাগ পাওয়া গেছে। ডান হাতে হালকা লালচে-কালো ছোট দাগ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালে আনার সময় বা গাড়িতে উঠানো-নামানোর সময় এ দাগ হয়ে থাকতে পারে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসে আসা লেখক মোস্তাক আহমেদের বড় ভাই ডা. নাফিছুর রহমান বলেন, মরদেহ আমি নিজে দেখেছি। কোনো প্রকার সমস্যা আমার চোখে পড়েনি। ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন ছাড়া আমি এ ব্যাপারে কী বলব? আমাদের কোনো অভিযোগ নাই। আমরা কোনো মামলাও করব না।

শুক্রবার বাদ মাগরিব লালমাটিয়া সি নদগতডপ মিনার মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে আজিমপুর কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন হবে।

শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শাফী মোহাইমেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মৃত অবস্থায় তাকে এ হাসপাতালে আনা হয়েছে। দৃশ্যত গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

‘তবে মৃত্যুর কারণ অধিকতর নিশ্চিত করতে তার ভিসেরা সংরক্ষণ করা হয়েছে। তা দিয়ে ঢাকার সিআইডি’র ল্যাবে কেমিকেল এনলাইসিস এবং ঢাকা মেডিকেলে হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষা করা হবে।’

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের ভেতরেই মোস্তাক আহম্মেদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ৮টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকার মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। ঢাকা মেট্রোপলিটনের রমনা মডেল থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় (নং ০২(০৫) ২০২০ সালের ৬ মে) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং পরে ২৪ আগস্ট থেকে তিনি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন।

লালমাটিয়ায় স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন তিনি। মা-বাবার একমাত্র পুত্রসন্তান তিনি। তিনি দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কুমির চাষের উদ্যোক্তা ছিলেন।

গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তারাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র‌্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত