ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

সৌরশক্তি ব্যবহারে কৃষকরা পাচ্ছেন বিনামূল্যে সেচ সুবিধা

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২১, ০৯:০৯  
আপডেট :
 ০৫ মার্চ ২০২১, ০৯:১২

সৌরশক্তি ব্যবহারে কৃষকরা পাচ্ছেন বিনামূল্যে সেচ সুবিধা
সৌরশক্তি ব্যবহারে কৃষকরা পাচ্ছেন বিনামূল্যে সেচ সুবিধা

গাজীপুরে কয়েক এলাকার কৃষকরা এখন সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিজমিতে বিনামূল্যে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। গাজীপুরের ৭টি এলাকার কয়েকশত কৃষক এ সুবিধা পাচ্ছেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানী শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের এ ক্ষুদ্র সেচ কর্মসূচী আলো ছড়াচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে। এতে কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ অনেকে কমে আসার পাশাপাশি পরিবেশেরও সুরক্ষা হচ্ছে।

বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফারুক হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের সিংহভাগ কৃষক তাদের কৃষিজমিতে সেচ দিতে ডিজেল চালিত ইঞ্জিন ও বিদ্যুৎচালিত মোটরের সাহায্য নিতে হয়। এতে কৃষি জমিতে উৎপাদন খরচ যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি কৃষকদের নিরবচ্ছিন্ন সেচের ভোগান্তি ও ভূগর্ভস্থ পানিরও অপচয় হয়।

বর্তমান সরকার কৃষির উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী শক্তির ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়ে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ নামের একটি কর্মসূচী চালু করেন। এ কর্মসূচীর (পাইলট প্রজেক্টের) অধীন গাজীপুরের শ্রীপুরের নান্দিয়াসাঙ্গুনে ২টি, ধামলই গ্রামে ২টি, কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকায় ১টি ও গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী এলাকায় ২টি সোলার পাম্প সরকারি অর্থায়নে স্থাপন করে দেয়া হয়। ইউরোপিয়ান যন্ত্রাংশে প্রতিটি সোলার পাম্প স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ২৩ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরে স্থাপন করা এক কেউসেক পানি উৎপাদনে সক্ষম এসব পাম্পের মাধ্যমে গাজীপুরের ৭টি এলাকার দেড় শতাধিক কৃষক প্রায় অর্ধশত একর জমিতে বিনামূল্যে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। জ্বালানী খরচ না হওয়া, পনির অপচয়রোধ, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারযোগ্য এ সেচ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

নান্দিয়াসাঙ্গুন এলাকার কৃষক মো. আবু নাছের বলেন, তাদের এলাকার কৃষিকাজে কৃষকদের সেচ নির্ভরতা ছিলো ডিজেল চালিত মেশিনের উপর। এতে তার এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে দেড় হাজার টাকা লাগতো। সোলার পাম্প স্থাপন করায় এখন আর সে খরচটা লাগছে না। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন খরচ কমেছে। বিনামূল্যের এ সেচে লাভবান হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা সোলার সেচে প্রতিনিয়ত আগ্রহী হচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, কৃষকদের সমন্বয়ে সমিতি গঠন করে এ সোলার পাম্পের স্কিম পরিচালিত হচ্ছে। ইরি ও বোরো মৌসুম ছাড়াও বছরজুড়ে নানা ধরনের মৌসুমি সবজির চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ সোলার সেচ পাম্প।

কৃষক বাদল মিয়ার দাবি, এসব স্থাপনকৃত সোলার পাম্পের উৎপাদিত শক্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যাটারির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে শুধু দিনের বেলায় সেচ দিতে হয়। এছাড়াও শীতকাল ও আবহাওয়া খারাপ থাকলে সেচ দেয়া যায় না। তবে ব্যাটারিতে চার্জ সংরক্ষরণের ব্যবস্থা করা হলে দিনের সাথে রাতের বেলায়ও সেচ দেয়া যেত। এতে এ সেচ সুবিধার মধ্যে আসতো আরো বেশি সংখ্যক কৃষক।

বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফারুক হোসেন আরো বলেন, পরিবেশ বান্ধব সেচ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহারে গুরুত্ব দিয়ে সৌরশক্তির এ সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। কৃষকরা বিনামূল্যে সরকারি এ সুবিধা ভোগ করতে পারছেন। এ সেচ পাম্প চালাতে কোনো খরচ হয় না বিধায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা এমন ধরনের সৌর বিদ্যুৎচালিত সেচ পাম্পের দিকে প্রতিনিয়তই ঝুঁকছেন।

এ বিষয়ে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সারোয়ার হোসেন বলেন, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষির উন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পানি সংরক্ষণ, সেচের অপচয় রোধ, ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারের লক্ষ্যে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ তেমনি একটি উদ্যোগ। এ ধরনের কর্মসূচীর মাধ্যমে সরকার কৃষকদের সৌরশক্তির ব্যবহারের উপর আগ্রহ তৈরি করছে। এর ফলে কৃষিতে উৎপাদন খরচ অনেক কমে আসবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত