ভ্যানের চাকায় রোকেয়ার সংসার
সোহেল রানা, হিলি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২১, ১৫:১৩ আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২১, ১৫:২০
নারীরা সমাজের বোঝা নয় বরং কঠোর পরিশ্রম তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সমাজের প্রতিটি স্তরে। হিলির বোয়ালদার গ্রামের রোকেয়া বেগম তারই যেন এক দৃষ্টান্ত। দুই পা হারিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি নয় বরং ভ্যানের চাকায় চলছে তার সংসার। রোকেয়া জীবন থেকে অনেকেরই শিক্ষা নেয়ার আছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
হিলি সীমান্ত থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে বোয়ালদাড় গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম। স্বামীকে নিয়ে বেশ ভালোই চলছিলো তার সুখের সংসার। কিন্তু হঠাৎ করে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায় রোকেয়ার। ট্রেন দুর্ঘটনায় দুটো পা হারান তিনি, সংসারে নেমে আসে সীমাহীন অভাব।
এমনই একটি সময়ে রোকেয়াকে রেখে সংসার ছেড়ে পালিয়ে যার তার স্বামী। তবুও জীবন সংগ্রামে থেমে নেই রোকেয়া। সংসারের হাল ছাড়েনি তিনি। নামেনি ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় বরং কষ্টের জমানো টাকায় কেনা ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে চলে তার সংসার।
জীবন সংগ্রামে থেমে নেই রোকেয়া
কথা হয় রোকেয়ার সাথে। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে ট্রেন দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়েছি। এরপর আমাকে ফেলে রেখে চলে গেছে স্বামী। সংসার দেখার মতো কেউ ছিলো না। অনেক কষ্ট নিয়ে কোনমতে সামন্য টাকা দিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান কিনি। সেই ভ্যানেরে টাকায় আমার সংসার চলে। আমি কারো কাছে ভিক্ষা চাই না বরং নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে আমি চলি।
তিনি আরো জানান, আমার কোনো জায়গা-জমি ছিলো না। সরকার আমাকে জায়গা দিয়েছে, কিন্ত বাড়ি করার সামর্থ্য নেই। যা উপার্জন করি তা আমার খেতেই যায়। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাকে যদি একটা বাড়ির ব্যবস্থা ও ভালো একটি ভ্যান দিতো, তাহলে আমার জন্য অনেক ভালো হতো।
শিক্ষা নেয়ার আছে রোকেয়ার জীবন থেকে
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন জানান, রোকেয়া পা কেটে যাবার পর সে অনেক কষ্ট করে দিন-পথ পার করে। তারপরও সে ভিক্ষা করে না। ভ্যান চালিয়ে সে নিজের সংসার চালায়। আসলে এটি আমাদের সমাজের জন্য নিশ্চয় একটি ভালো দিক।
সমাজে এমনও মানুষ আছে, যারা সামন্য কিছুতেই বেছে নেয় ভিক্ষাবৃত্তির পথ। তবে সেসব মানুষকে শিক্ষা নেয়া উচিত রোকেয়ার জীবন থেকে। জীবন চলার পথে থমকে যাবে না নারীরা। রোকেয়ার মতোই উঠে দাঁড়াবেন নারীরা, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে
