ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

কুইক রেসপন্স টিমে স্বামী-স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগই বেশি

  মো.ফরহাদ উজজামান

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২১, ১৮:২৯  
আপডেট :
 ২৫ মার্চ ২০২১, ১৮:৩৩

কুইক রেসপন্স টিমে স্বামী-স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগই বেশি

নারীর ওপর সহিংসতা বা নির্যাতনের বিষয়টি নানাভাবে আলোচনায় এলেও তা আড়ালে থেকে যায়। নির্যাতনের বিষয়ে যে আইনি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তা-ও বেশির ভাগ ভুক্তভোগী নারীর অজানা। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা নিরসনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন করেছে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি)।

নারীদের অসুবিধা শুনতে ও সামাজিক নির্যাতন প্রতিরোধ করতে একটি বিশেষ টিমের প্রয়োজন অনুধাবন করে গত বছর ২৭ অক্টোবর কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়। তেজগাঁও থানা প্রাঙ্গণের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অধীনে এই টিমের উদ্বোধন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। সেই সাথে এই টিমের জন্য একটি হটলাইন ০১৩২০০৪২০৫৫ নম্বর চালু করা হয়। তবে প্রচারের অভাবে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ ফোন পাচ্ছেন না তারা।

উদ্বোধনের পর থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত কিউআরটিতে অভিযোগ আসে ১৩০টি। তবে সব অভিযোগের কল লিপিবদ্ব করা হয় না বলে জানান, উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোছা.মফেলা খাতুন মেমী। এর বেশির ভাগ স্বামীর দ্বারা স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ। মেমী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ১৩০টি অভিযোগের মধ্যে পারিবারিক নির্যাতনের কলই বেশি। যৌতুকের জন নির্যাতনসহ অনেক সমস্যা নিয়ে নারীরা কল করছেন। তিনি বলেন, কখনো কখনো নির্যাতিতা নারীর পরিবারের কেউ ফোন দিয়ে জানান তার বোন বা আত্নীয় কেউ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

মফেলা খাতুন মেমী বলেন, অনেক সময় যেয়ে দেখা যায়, পারিবারিক দ্বন্দে অনেক নারী অভিযোগ জানালে আমরা সেক্ষত্রে তাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কেউ যদি চলে আসতে চায় সেক্ষেত্রে আমরা দুই পক্ষকে ডেকে পরামর্শ দিয়ে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

কুইক রেসপন্স টিমের কর্মকর্তারা বলেন, অনেক সময় ডিএমপির বাইরে থেকেও কল বেশি আসে। আবার ৯৯৯-এর মাধ্যমে কল পেয়েও নিকটন্থ থানায় ভিক্টিমদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও তাদের মানসিক নির্যাতনের বিষয়েও বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতারণা, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক, খারাপ ব্যবহার, অনলাইনে প্রতারণাসহ বিভিন্ন বিষয়েও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, শিশুদের খেলার জন্য বিভিন্ন উপকরণ রয়েছে এখানে। কিউআরটির নারী পুলিশের সাথে ও পুরুষ সদস্যরাও কাজ করছে।

উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার লায়লা ফেরদৌসী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, কিউআরটি যেকোন কলে সাড়া দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে যায়। তবে অনেক সময় ঘটনাস্থলে যেয়ে ভুক্তভোগীদের পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, নির্যাতিত নারীদের উদ্ধারের পর তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এসব নির্যাতিত বা অভিযুক্তদের বাচ্চা থাকলে ভিক্টিম সেন্টারে নিয়ে এসে রাখা হয়। এখানে তাদের জন্য থাকা ও খেলার ব্যবস্থাও রয়েছে।

এ বিভাগের অধীনে তদন্ত ইউনিট, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পাশাপাশি কিউআরটিও পরিচালিত হচ্ছে। একজন উপ-পুলিশ কমিশনারের অধীনে কুইক রেসপন্স টিসের ২৮ টিম ২৪ ঘন্টা কাজ করছে বলে কর্মকর্তার জানান। বর্তমানে উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হামিদা পারভীন এর নেতৃত্বে এই টিম দায়িত্ব পালন করছেন। একজন সাব-ইন্সপেক্টর প্রতিটি দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডিএমপির উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অধীনে এই টিম ২৪ ঘন্টা কাজ করছে।

নারীরা রাস্তায় বা অন্য কোথাও অনিরাপদ বোধ করলে বা বিপদে পড়লে এই টিমের হটলাইনে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক সাহায্য নিতে পারছেন। নারী ও শিশুকে যেকোন সহায়তা দিতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত