‘মরলে এমনি মইরা যামু, টিকা লাগবো না’
মোস্তাফিজুর রহমান
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩২ আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩৮
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী মনোয়ারা বেগম। করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন তিনি তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখনো নেননি করোনার টিকা। কথা হলে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘টিকা নিয়া কি হইবো। মরলে এমনি মইরা যামু, টিকা লাগবো না।’
একই এলাকার আরেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী শামসুল আলমের মুখেও একই সুর। তিনিও করোনার টিকা নিতে আগ্রহী নন। তাদের মতো আরো বেশ কয়েকজন পরিস্থন্নতাকর্মীর সঙ্গে কথা বললে টিকার বিষয়ে এমন অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
তবে কয়েকজন করোনার টিকার বিষয়ে আগ্রহী হলেও তারা জানেন না টিকা কিভাবে নিতে হবে। কোথায় গেলে কিভাবে নিবন্ধন করা যায়, বা কোথায় টিকা দেয়া হয়- এসব বিষয়ে তাদের কোন ধারণাই নেই।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি হলেও তাদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে করপোরেশন থেকে পৃথক কোনো উদ্যোগ নেই। তবে কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে টিকা নিলেও সেটির কোন তথ্য সিটি করপোরেশনের কাছে নেই।
এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের কাজ করছেন অন্তত ৯ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী। এবিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম সাইদুর রহমান বুধবার বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমরা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের টিকা দেয়ার নিবন্ধন করার বিষয়ে উদ্ধুদ্ধ করছি।
তবে টিকা নেয়ার বিষয়ে সিটি করপোরেশনের পৃথক কোন কার্যক্রম নেই বলেও জানান ডিএনসিসির এই কর্মকর্তা। ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. বদরুল জানান, টিকা নিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আগ্রহী করা চেষ্টা চলছে।
সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র বা বয়সবিষয়ক সমস্যা আছে। নিবন্ধন করতে গেলে সেগুলো প্রয়োজন। গত ২৭ জানুয়ারি করোনা টিকা দেয়ার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গন টিকাদান কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে এখন পর্যন্ত ৫৫ লাখের অধিক ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। তবে এই কার্যক্রমে গত দুই মাসে টিকার অগ্রাধিকারে উপেক্ষিত ব্যাপক ঝুঁকিতে থাকা পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসএমআর