ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

হেফাজত ইস্যুতে ধরমপাশার ঘটানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:৩৯  
আপডেট :
 ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৮

হেফাজত ইস্যুতে ধরমপাশার ঘটানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২
হেনস্তার শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খান।

হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতা আফজাল খানকে সুনামগঞ্জের ধরমপাশায় হেনস্তা ও আটকে রাখার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় আল মুজাহিদ (২৫) ও জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলমসহ (৬৫) ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। বুধবার রাতে এ মামলা করা হয়। ইতিমধ্যে আল মুজাহিদ ও আবুল হাশেম আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ধরমপাশা থানার ওসির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ওসি (তদন্ত) মো. আতিকুর রহমান বৃহস্পতিবার সকালে মামলা দায়ের ও দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার দুজনকে আজ আদালতে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ঢাবি ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপসম্পাদক আফজাল খানের বাড়ি উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্তা ও অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় বুধবার রাতে ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ধরমপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা আফজাল গত ২৯ মার্চ দুপুরে ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ছবি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। ঘণ্টা তিনেক পর তিনি স্ট্যাটাসটি শুধু নিজে দেখতে পাওয়ার মতো (অনলি মি) ব্যবস্থা করেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু যুবক এর স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন। এদিন বিকেল পাঁচটার দিকে ওই ছাত্রলীগ নেতা নিজের গ্রাম মহেশপুর থেকে জয়শ্রী বাজারে যান। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলমের ছেলে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের কারিগর আল মুজাহিদ (২৫) বিভিন্ন বয়সী ৩০ থেকে ৪০ জনকে নিয়ে কেন ওই পোস্ট দিয়েছেন, তার ব্যাখ্যা জানতে চান। আফজাল তখন উপস্থিত লোকজনকে বলেন, তিনি হেফাজতে ইসলামকে ব্যঙ্গ করে কোনো পোস্ট দেননি। তবে হেফাজতের আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিবাদে পোস্ট দিয়েছেন।

এ নিয়ে তাদের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। সেখানে লোকসমাগম বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মুজাহিদ ওই ছাত্রলীগ নেতার শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। আফজালের কয়েকজন বন্ধু ও স্থানীয় কয়েকজন তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মুজাহিদের পক্ষের লোকজন বেশি হওয়ায় তারা আফজালকে জয়শ্রী বাজারে থাকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আটক করে রাখেন। দলীয় কার্যালয়ের আশপাশে তখন তিন শতাধিক মানুষ অবস্থান নেয়।

খবর পেয়ে ধরমপাশা থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আফজালের বিপক্ষে জড়ো হওয়া মানুষকে শান্ত করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে সেখানে উপস্থিত হন ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানের ভাষ্য, ওসির নির্দেশে তাকে হাতকড়া পরানো হয়। উপস্থিত লোকজনের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে ধরমপাশা থানার পুলিশ। এরপর তাকে ধরমপাশা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার বিস্তারিত পরিচয় পেয়ে মাঝপথেই পুলিশ হাতকড়া খুলে দেয়। থানায় তিনি রাত সাড়ে আটটার দিকে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। পুরো ঘটনার বিবরণ সাদা কাগজে লিখে তাতে সই করে তিনি থানা থেকে ছাড়া পান।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত