ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভবন মালিকের প্রতারণায় কারখানার কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১২:২৭

ভবন মালিকের প্রতারণায় কারখানার কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি
ছবি: প্রতিনিধি

গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকায় মাইশা মনীশা নীটওয়্যারর্স লিমিটেড’র মালিক কে বি এম ওবায়েদের কাছ থেকে টেক্স-ডিজাইন নীট ওয়্যার লিমিটেড’র পরিচালক মো. রুহুল আমীন ভবন ভাড়া নিয়ে যথাযথভাবে ভাড়া পরিশোধ করার পরও ভবন মালিকের নানা প্রতারণার কারণে তালা ঝুলছে ভবনে। এমতাবস্থায় ভবনের জামানতের ৩৩ লাখ টাকা ছাড়াও কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন টেক্স-ডিজাইন নীট ওয়্যার লিমিটেড’র পরিচালক মো. রুহুল আমীন।

বৃহস্পতিবার গাজীপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে টেক্স-ডিজাইন নীট ওয়্যার লিমিটেড এর পরিচালক মো. রুহুল আমীন লিখিত বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমীন বলেন, ১লা এপ্রিল ২০১৮ তারিখ হতে মাইশা মনীশা নীট ওয়্যার লিমিটেড, ভোগড়া বাজার, গাজীপুর ঠিকানার কেএম ওবায়েদের কারখানা ভবনটি ভাড়া নেয়ার জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে ৪টি চুক্তিপত্র করা হয়। এর আলোকে ৮৫ লাখ ২০ বিশ হাজার টাকা প্রদান করা হয় ভবন মালিককে। যথাযথ চুক্তি করে অগ্রীম বাবদ মোট ৬০ লাখ টাকা, মাসিক ভাড়া বাবদ ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং লোন হিসাবে আরো ৪ লাক টাকা কেএম ওবায়দকে তার ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়া হয়। চুক্তিতে কারখানার মাসিক ভাড়া বাবদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।

পরবর্তীতে মাইশা মনীশা নীট ওয়্যার লিমিটেড এর মালিক কে বি এম ওবায়েদ, তার স্ত্রী ও কন্যা কর্তৃক বিভিন্ন সময় নানা হয়রানী শুরু করেন এবং আমার ব্যবসায়ীক ক্ষতি সাধন করেন। চুক্তির বাইরেও আরো ১০লাখ টাকা অগ্রিম দাবি করেন তিনি। ওই টাকা না দেয়ায় ২০১৯ সালের ২৪ জুন থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত চার মাস বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখেন ভবন মালিক। পরে আরো ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়।

কিন্তু ইতোমধ্যে চার মাস বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় টেক্স-ডিজাইন নীট ওয়্যার লিমিটেড এর শ্রমিক ও স্টাফদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিয়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া কারখানা ভাড়া নেয়ার পর বিল্ডিং নির্মাণ, ইলেকট্রিক ওয়্যারিং ইত্যাদি পুনরায় সংস্কার করার জন্য টেক্স-ডিজাইন নীট ওয়্যার লিমিটেড নিজস্ব তহবিল থেকে ১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এ পর্যন্ত টেক্স-ডিজাইন নীট ওয়্যার লিমিটেড’র প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে অগ্রিম জামানত বাবদ মোট ৩৩ লাখ টাকা নিয়েও নানাভাবে হয়রানী করে যাচ্ছেন ভবন মালিক কে বি এম ওবায়েদ ও তার স্ত্রী-কন্যারা।

উপরন্তু গত ১১ এপ্রিল আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন ওবায়েদের স্ত্রী-কন্যারা। সংবাদ সম্মেলনে কারখানার মেশিনপত্রসহ আমরা লাপাত্তা হয়ে গেছি বলে মিথ্যা অভিযোগ করেন। অথচ আমার কাছে ভাড়া দেয়ার আগেই ওবায়েদ সেখানে থাকা তার মেশিনপত্র বিক্রি করে তার শ্রমিক ও স্টাফদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করে গেছেন।

এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকা চার মাসের মাসিক ভাড়া বাদ দিয়ে মোট ৩৩ মাসের মধ্যে ২৯ মাসের ভাড়ার টাকা কেটে নিলেও রুহুল আমিন অগ্রিম জামানত বাবদ হিসেবে ওবায়েদের কাছে ৩৩ লাখ টাকা পাওনা থাকেন। অগ্রিম বাবদ পাওনা ৩৩ লাখ টাকা ফেরত দিলে কারখানা ছেড়ে দিব মর্মে মাইশা মনীশা নীট ওয়্যার লিমিটেড কর্তৃপক্ষকে নোটিশও প্রদান করা হয়। কিন্তু কেএম ওবায়েদ তাতেও কোনো সাড়া দেননি।

সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক’র নিকট ৮ কোটি টাকা ঋণখেলাপী মাইশা মনীশা নীট ওয়্যার লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। এর কারণে তিনটি ওয়ারেন্ট নিয়ে কেএম ওবায়েদ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং তার স্ত্রীও এক বছর জেল খেটে জামিনে আছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি ঋণ খেলাপী হওয়া ইসলামী ব্যাংক উত্তরা শাখা কেএম ওবায়েদের ওই ভবনটি নিলামে বিক্রির জন্য আদালতের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এবং কারখানায় ভবনে তালা আটকে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এমতাবস্থায় টেক্সডিজাইন নামের কারখানার মালিক জীবনের সব সঞ্চয় ওই কারখানা খরচ করে এখন পথে বসেছেন বলেন তিনি। এ ব্যাপারে আদালত মামলা ও থানায় একাধিক অভিযোগ দেয়া আছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত