ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঝড়ে ভেঙে পড়লো প্রধানমন্ত্রীর উপহার!

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:৩৯

ঝড়ে ভেঙে পড়লো প্রধানমন্ত্রীর উপহার!
ছবি: প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে বসবাসের আগেই সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। এছাড়া উপহারের তালিকায় নেই পানি, বিদ্যুৎ কিংবা রাস্তা। নির্মানকাজ শেষ হলেও ভুঁতড়ে এসব ঘরে কেউই থাকছেন না।

শুক্রবার দিনগত মধ্যরাতে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা আশ্রয়নে সামান্য ঝড়ে ভেঙে পড়েছে বারান্দার পিলার। উড়ে গেছে ঘরের টিন।

জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে ভূমিহীনদের পাকা বাড়ি উপহার দিতে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ গ্রহন করে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারের জন্য দুইশতাংশ জমি, দুই কক্ষের একটি পাকা ঘর, রান্না ঘর ও টয়লেটেসহ একটি বাড়ির মালিকানা উপহার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সদর উপজেলায় ১৫০টি পরিবারের আবাসনের জন্য অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রথম দিকে খাস জমি শনাক্ত করে ভূমি অফিস। পরে সেই খাস জমিতে পাকা বাড়ি তৈরীর কাজ বাস্তবায়ন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার।

সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা এলাকায় ১০টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ১০টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। দুই মাস আগে এসব বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হলে সুফলভোগীদের হাতে জমির দলিল ও বাড়ির চাবি হস্তান্তর করে সদর উপজেলা প্রশাসন। বাড়ির চাবি হস্তান্তরের ২ মাস পার হলেও যোগাযোগের রাস্তা, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কোন সুফলভোগি বসবাস শুরু করেননি। ফলে ফসলের ক্ষেতের মাঝে ভুঁতড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার।

এরই মাঝে শুক্রবার দিনগত মধ্যরাতে সামান্য ঝড়ে ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়েছে। উড়ে গেছে বারান্দাসহ ঘরের ছাউনির টিন। বসবাস শুরুর আগেই ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে সকলের মাঝে।

সুফলভোগি ও স্থানীয়রা জানান, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দায়সারা ভাবে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। টয়লেটে সিরামিকের প্যান বসানোর কথা থাকলেও বসানো হয়েছে প্লাস্টিকের প্যান। ব্যবহারের আগেই ফেঁটে চৌচির টয়লেট। নেই পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। চলাচলের মতো রাস্তাও নেই। শুরু থেকে ভাল মানের কাজের দাবি করে আসলেও সুফলভোগিদের সেই দাবি কেউ রাখেনি।

হালিমা বেগম নামে একজন জানান, ১০ বছর আগে স্বামী তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। সেই থেকে বাবার বাড়িতে ঝুপড়ি ঘরে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভূমিহীন হওয়ায় জমিসহ পাকা ঘর উপহার পাওয়ার খবরে বেশ আনন্দই পান তিনি। জমির দলিল ও বাড়ির চাবি পেলেও থাকার পরিবেশ নেই নবনির্মিত আশ্রয়নে। তাই বসবাস শুরু করেননি। এরই মধ্যে সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে তার উপহারের ঘর। ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বলেও কোন কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ভেঙে যাওয়া ইট ও টিনগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন।

এদিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, স্টিমেট অনুযায়ী সব কাজ করা হয়েছে। যা বরাদ্ধ তাই ব্যয় করা হয়েছে। ঝড় হলে তো ঘরে ভেঙে যেতেই পারে। তবে ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামত করে দেয়া হবে।

একই সাথে পানি, বিদ্যুৎ ও চলাচলের রাস্তা শিগগিরই করে দেয়া হবে বলেও জানান এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত