ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ: আহত আরও ২ শ্রমিকের মৃত্যু

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:৩৯

বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ: আহত আরও ২ শ্রমিকের মৃত্যু

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক ও পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় আহত মো. শিমুল (২৩) ও রাজিউল ইসলাম (২৫) নামের আরও দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাতজনে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) ও নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবির।

নিহত শিমুল সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আব্দুল মালেকের ছেলে। আর রাজিউল ইসলাম দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার বেতদিঘি গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি বাঁশখালীর এস আলম গ্রুপের পাওয়ার প্লান্টের বয়লারের ফিল্টারম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবির জানান, বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিমুল। অন্যদিকে নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে মঙ্গলবার রাত ২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজিউল ইসলাম।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত শ্রমিক মারা গেছেন। সংঘর্ষের দিন আহত অবস্থায় চমেক হাসপাতালে আনা হলে প্রথমে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। একইদিন অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তালুকদার জিয়াউর রহমান শরীফ বলেন, রাজিউল ইসলাম নামে একজনকে স্থানীয়রা পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করান। রোববার (১৮ এপ্রিল) তার অপারেশন করা হয়। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে মারা যান তিনি।

এর আগে গত শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ৩০ জন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে আলাদা ২টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মামলা হয়েছে দুইটি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে-বিপক্ষের লোকজন ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে দুই ভাইসহ চারজন নিহত হয়েছিল। এ ঘটনায় আহত হয়েছিল ১১ পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন। সেখানে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল স্থানীয়দের একটি পক্ষ। ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য এসএস পাওয়ার লিমিটেড ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছিল।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসএস পাওয়ার লিমিটেড ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথ উদ্যোগে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ ভবনে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছিল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য গণ্ডামারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমি কেনা হয়েছে।

এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশের মালিকানা থাকবে এস আলম গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশের মধ্যে সেপকো ২০ শতাংশ এবং চীনের অপর প্রতিষ্ঠান এইচটিজি ১০ শতাংশের মালিক হবে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর কেন্দ্রটিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও উৎপাদনে যেতে পারেনি তারা।

আরও পড়ুন- বাঁশখালীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিতে ৫ শ্রমিকের মৃত্যু

বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় ২ মামলা

পাঁচ বছর পর ফের রক্ত ঝরলো বাঁশখালীর গণ্ডামারায়

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত