ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাতদিনে আক্রান্ত আড়াই হাজার

ভোলায় লাফিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া, পানিতে মিলছে জীবাণু

  ভোলা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০৬

ভোলায় লাফিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া, পানিতে মিলছে জীবাণু
ছবি- প্রতিনিধি

ভোলার পুকুরের পানিতে ডায়রিয়ার জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় নমুনা পরীক্ষা করে এ জীবাণুর সন্ধান পেয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ। গত ৭ দিনে আড়াই হাজার রোগী ডায়রিয়ায় আক্রন্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক জনের।

এমন পরিস্থিতিতে ডায়রিয়া মোকাবেলায় জেলায় জরুরি ভিত্তিতে ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে করা হচ্ছে মাইকিং।

নদী ও খালের পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, বৃষ্টি না হওয়া এবং গরমের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে ডায়রিয়া সংক্রমণ বেড়েছে বলে মনে করছে ভোলার স্বাস্থ্যবিভাগ।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভোলার বিভিন্ন হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীদের চাপ। শয্য সঙ্কটে রোগীদের বাধ্য হয়েই মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও ডাক্তাররা।

৭ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রন্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আড়াই হাজার রোগী

তিনি বলেন, ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত ৩ দিন আগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্যবিভাগের একটি টিম ভোলার খাল ও পুকুরের পানির নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআর এ পাঠায়। সেখান নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে পানিতে ডায়রিয়ার জীবাণু (ই-কলআই) পাওয়া গেছে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। তারা গ্রামেগঞ্জে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ডায়রিয়া থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পাড়া মহল্লায় শুরু হয়েছে মাইকিং।

সিভিল সার্জন আরও বলেন, খাওয়া, গোসল ও গৃহস্থালী কাজে বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার না করা এবং হাইজিং মেনটেন না করায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। তাই সকলকে হাইজিং মেনটেনের পাশাপাশি পুকুর ও খালের পানি পরিহার করে টিউবওয়েলের পানি ব্যবহারের পরামর্শ দেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান এই কর্মকর্তা।

ভোলা সিভিল সার্জন দপ্তর সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে জেলায় ২ হাজার ৭০২ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। অন্যদিকে এক মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজারের বেশি।

শয্য সঙ্কটে রোগীদের বাধ্য হয়েই মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে

সরোজমিনে ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ১০ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গড়ে প্রতিদিন ধারণক্ষমতার ১০ থেকে ১৫ গুণ অধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। আসন কম হওয়ায় কষ্ট করেই মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হয় অধিকাংশ রোগীর।

এরই মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে জরুরি বিভাগে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

রোগী ও স্বজনরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ও বাথরুমসহ নানা অব্যপস্থাপনার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। এমনকি ডায়রিয়ার ওষুধ ও স্যালাইনের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে সেবাদানকারীদের।

জনবল সঙ্কটে একসঙ্গে এত রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে স্বীকার করে ভোলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ডায়রিয়া রোগীদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ ও স্যালাইন সরবরাহ রয়েছে। তারা সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ওষুধ ও স্যালাইনের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগটি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত