ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঠিকাদার জেলে থাকায় কাজ বন্ধ, রাস্তা যেন মরণফাঁদ

  রুহুল আমিন, ধামরাই প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২১, ১৬:৪২

ঠিকাদার জেলে থাকায় কাজ বন্ধ, রাস্তা যেন মরণফাঁদ

ঢাকার ধামরাইয়ে সূয়াপুর থেকে ফোর্ডনগর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ঠিকাদার বর্তমানে জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে সূয়াপুর থেকে খড়ারচর বাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্তকরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি রয়েছে খড়ারচর বাজার থেকে ফোর্ডনগর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়ক।

এ সড়কটুকু খানাখন্দে ভরা প্রায় এক বছর আগে থেকে। এ কাজের ঠিকাদার ফরিদপুর জেলার ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। তিনি বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। তার কাজের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু নতুন করে দরপত্র আহ্বান না করায় খানাখন্দ ও ভাঙা সড়কে চলাচলকারী এলাকাবাসী মহাদুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। বৃষ্টি হলে রাস্তায় হাঁটা যায় না। ঘটে নানা ধরনের দুর্ঘটনা।

উপজেলার প্রকৌশলী কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই বছর আগে দরপত্রের মাধ্যমে ধামরাইয়ের সূয়াপুর বাজার থেকে কুল্লা ইউনিয়নের ফোর্ডনগর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণে ১৭ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৮ টাকার কাজ পান ফরিদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফিয়া কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।

চুক্তির শর্তানুযায়ী, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ করার পর ঠিকাদার ইমতিয়াজ হাসান রুবেল বিভিন্ন অপরাধ-অপকর্মের কারণে গ্রেপ্তার হন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করার জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হয়।

সাড়া না পেয়ে গত বছর ৯ অক্টোবর ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী এ কাজের কার্যাদেশ বাতিল করেন। এরপর থেকে নতুনভাবে কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খড়ারচর বাজার থেকে ফোর্ডনগর পর্যন্ত পুরো রাস্তার খোয়া ও পিচ উঠে গেছে। এর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় ছোট-বড় হাজারো গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে এসব গর্তে জমে থাকা পানি দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ভাঙা সড়কে প্রায় প্রতিদিনই রিকশা-ইজিবাইক উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। গেছে বেহাল অবস্থা হয়েছে রাস্তার।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রায় এক বছর ধরে সড়কটুকু বেহাল থাকায় পড়ে আছে। জনগণের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করছে। পুরো সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। পিচ উঠে গিয়ে এটি মাটির রাস্তায় পরিণত হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটু পানি।পাকা রাস্তার বেহাল অবস্থা।

এ বিষয়ে রোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম সামসুদ্দিন মিন্টু বলেন, রোয়াইল ইউনিয়ন সবজি আবাদের জন্য বিখ্যাত। এখানকার সবজি রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি আড়তে যায়। কিন্তু ভাঙা সড়কের কারণে পিকআপ ও ছোট ট্রাকগুলো অনেক বেশি ভাড়া নিচ্ছে। এতে চাষিরা লাভবান হতে পারছেন না।

জরুরি ভিত্তিতে পুনরায় টেন্ডারের মাধ্যমে প্রশস্তকরণের দাবি জানান চেয়ারম্যান। আর যদি রাস্তার অবস্থা ঠিক না হয় তাহলে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়বে বলে জানান।

কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কালিপদ সরকার বলেন, সূয়াপুর থেকে ফোর্ডনগর পর্যন্ত রাস্তাটুকু সরু ও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থার কারণে যান চলাচল একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাভার হয়ে রাজধানী যাওয়ার বিকল্প সড়ক হওয়ায় এই সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ।

উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুল হক বলেন, চুক্তির শর্তানুযায়ী কাজ শেষ করার সময় পার হওয়ায় কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। বাকি কাজের জন্য নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। অতিদ্রুত কাজ শুরু করে মানুষের ভোগান্তি দূর করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত