ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধের আহ্বান

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২১, ০১:৪১

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধের আহ্বান
ছবি সংগৃহীত

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সসহ (বিআইপি) বিভিন্ন সংগঠন। প্রস্তাবিত প্রকল্পের পরিকল্পনাগত বিশ্লেষণ এবং পরিবেশ-প্রতিবেশগত প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও পরিমার্জন করে পুনরায় প্রকল্পের পরিকল্পনা তৈরি করার আহ্বান জানায় সংগঠনগুলো।

এক্ষেত্রে প্রকল্প প্রণয়নে যথোপযুক্ত পেশাজীবী যথা নগর–পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, নগর নকশাবিদ, প্রকৌশলী, উদ্যানতত্ত্ববিদ, বাস্তুতন্ত্র ও প্রতিবেশ বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানীদের রাখার প্রস্তাবও করা হয়েছে।

শনিবার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে সংগঠনগুলো তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়। বিবৃতে ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক ও পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বিবলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকার অক্সিজেনের আধার ও ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত উদ্যান।

তিনি বলেন, স্থাপত্য অধিদপ্তরের ডিজাইন করা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন প্রকল্পে বাংলাদেশের বিদ্যমান পরিকল্পনা, পরিবেশ ও উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট আইন-বিধিবিধান অনুসরণ করা হলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিবেশের ওপর এমন ধ্বংসযজ্ঞ হওয়ার কথা ছিল না। ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঠিক পরিকল্পনা তৈরির মাধ্যমে ঐতিহাসিক স্মৃতি ও পরিবেশ—দুটোই রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করেন বিআইপির নেতারা।

এদিকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদ, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা, বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, আইটিআই, বাংলাদেশ কেন্দ্র ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ব্যঞ্জনা উপলব্ধি করতে পারে, তার জন্যই এই বিশাল চত্বর বা উদ্যানের অবয়ব সংরক্ষণ করা জরুরি। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থানটিতে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ভাস্কর্য নির্মাণ করে সামনে বিশাল খোলা প্রান্তর অক্ষত রাখা হোক। আর যে স্থানটিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সে স্থানেও স্মারক বা স্মৃতিফলক রাখা হোক।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সব ধরনের হোটেল নির্মাণ ও পাঁচ’শ গাড়ি পার্কিংয়ের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোনো বিনোদন কেন্দ্র নয়, এটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কেটে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং অক্সিজেনের অফুরন্ত উৎসকে নিধন করা হচ্ছে।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন এক বিবৃতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ উদ্যান সংরক্ষণে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

ওই রায়ে বলা হয়েছে, রমনা তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা নিছক একটি এলাকা নয়। এর একটি ঐতিহাসিক ও পরিবেশগত ঐতিহ্য আছে। শুধু তাই নয় ; এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্র এই এলাকা। এই পরিপ্রেক্ষিতেও এটি বিশেষ এলাকা হিসেবে সংরক্ষণের দাবি রাখে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত