ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

চট্টগ্রামে করোনায় আরো ৮ মৃত্যু

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২১, ১১:২১  
আপডেট :
 ০৯ মে ২০২১, ১১:২৬

চট্টগ্রামে করোনায় আরো ৮ মৃত্যু
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ হাজার ১৯৭টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৪ জনের নমুনায়। এরমধ্যে নগরে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৫ জনের নমুনায়। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫১ হাজার ৯৩টি নমুনায়। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নগরে ৬ জনসহ চট্টগ্রামে আরো ৮ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

রোববার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।

সরকারি হিসাবে জেলায় সবমিলিয়ে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬৩ জন। এর মধ্যে নগরে মৃত্যু হয়েছে ৪১৬ জনের ও উপজেলায় ১৪৭। নগরে যেসব এলাকায় মৃত্যু বেশি, সেগুলো হল হালিশহরে ৪৬ জন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কোতায়ালী এলাকায় ৪৪ জন, পাঁচলাইশে ৩২ জন ও চাদগাঁ এলাকায় ৩০ জন। ৩১ মৃত্যু নিয়ে উপজেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে হাটহাজারী।

প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনা শনাক্ত হয় ২২ জনের নমুনায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ৪টি নমুনা পরীক্ষা করে কারো করোনা শনাক্ত হয়নি। শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ৫০৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৪ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জন ও মেডিকেল সেন্টার ল্যাবে ১১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

এছাড়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তদের মধ্যে সাতকানিয়ার ২ জন, বাঁশখালীর ১ জন, আনোয়ারার ১ জন, চন্দনাইশের ১ জন, রাউজানের ২ জন, ফটিকছড়ির ২ জন, হাটহাজারীর ১ জন, সীতাকুণ্ডের ৬ জন ও সন্দ্বীপের বাসিন্দা রয়েছেন ৩ জন।

এদিকে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত থেকে সেরে ওঠাদের ৮৮ দশমিক ৬০ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির পাশাপাশি আরটি–পিসিআর পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ হওয়া ২৬ শতাংশের শরীরেও কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এছাড়া অ্যান্টিবডি ৯ মাস পর্যন্ত শরীরে বিদ্যমান থাকার প্রমাণ পেয়েছেন একদল গবেষক। আরটি–পিসিআর পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হওয়া ও নেগেটিভ হওয়া মিলে ৬৫ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। তবে পজিটিভ হয়ে সুস্থ হওয়ার পর অনেকের শরীরে অ্যান্টিবডি ছিলো না। পজিটিভ হওয়া ৯৪১ জনের মধ্যে ১০৭ জন এবং নেগেটিভ হওয়া ৫৮৯ জনের মধ্যে ৪৩৬ জনের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি। গবেষণায় পুরুষের অংশগ্রহণ ছিলো ৭৬ শতাংশ। বাকিরা ছিলেন নারী।

গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিডে আক্রান্তদের ৯২ শতাংশের জ্বর ছিলো, কাশি ছিলো ৬৩ শতাংশের, ঘ্রাণশক্তি লোপ পায় ৫২ শতাংশের। এছাড়া গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ ছিলো। আক্রান্তদের ১৫ শতাংশের ডায়াবেটিস, ২৩ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপ, ৯ শতাংশের শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা ও হৃদরোগ ইত্যাদি ছিলো। এছাড়া এইডস ও ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও করোনায় আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়ার বিষয়টি গবেষণায় উঠে এসেছে। তাদের শরীরে অ্যান্টিবডিও পাওয়া গেছে।

গবেষণায় দেখা যায়, কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরে প্রায় ৫৭ শতাংশের কোনো না কোনো উপসর্গ দীর্ঘদিন ধরে ছিলো। এগুলোর শারীরিক দুর্বলতা, ব্যথা, দুশ্চিন্তা, অবসাদ, কাশি, চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ উল্লেখযোগ্য।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবদুর রব বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবত কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছি। কোভিড-১৯ কে আরো বিশদভাবে জানার লক্ষ্যে রোগীদের লক্ষণ, সেরে ওঠার পর দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এবং এন্টিবডির উপস্থিতি নিয়ে এই গবেষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল সরকারের চলমান কোভিড-১৯ টিকা কর্মসূচীকে আরো গ্রহণযোগ্য ও গতিশীল করবে। কোভিড–১৯ থেকে সেরে ওঠার পর ৯ মাস পর্যন্ত অনেকের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আবার পজিটিভ অনেকের অ্যান্টিবডি ছিলো না। এসব তথ্য আরো বিষদে বিশ্লেষণ করে কোনো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি।’

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত