ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আশ্রিত বৃদ্ধাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করলো ছাত্রলীগ

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২১, ১৯:১৫  
আপডেট :
 ১৪ মে ২০২১, ১৯:২২

আশ্রিত বৃদ্ধাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করলো ছাত্রলীগ
ছবি- প্রতিনিধি

মৌসুমী কেগম। বয়স এখন ৭৫। পুরো পৃথিবীতে কেউ না থাকায় ঠাঁই মিলেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাইশুর বৃদ্ধাশ্রমে। এখন তার বাড়ি বা ভিটা বলতেই বৃদ্ধাশ্রম। জীবনে নেই কোন ঈদ নেই কোন আনন্দ। তারপরেও এবছর একটু ভিন্নভাবেই ঈদ উদযাপন করলেন এ বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতরা। গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের একটি দল বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতদের সাথে উদযাপন করলো ঈদ আনন্দ। এতে আশ্রিতরা সন্তানের মত পরম স্নেহে আনন্দে অংশ নেন।

বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্যা ও সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ২০ সদস্যের একটি দল বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে হাজির হন। এসময় তারা এসব বৃদ্ধাদের খোঁজ খবর খবর নেন। সন্তান আর পরিবারহীন এসব আশ্রিত বৃদ্ধারা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে তাদের বিনামূল্যে চিৎকিসা সেবা দেয়া হয়।

এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৃদ্ধাশ্রমে ঠায় পাওয়া মা-বাবাদের নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেন। থালায় তুলে দেন বিভিন্ন রকমের খাবার। সন্তানের হাতে দেয়া খাবার মনে করে পরম স্নেহে মুখে তুলে নেন। তাদের একরাশ আনন্দ আর খুশিতে যেন ভুলে গিয়েছিলেন জীবনে না পাওয়ার দু:খ আর কষ্টকে।

বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মমতা বিশ্বাস (৭০), গোলাপী সরকার (৭৫) হৈমতি সরকার বলেন, এখানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছি। আমাদের নেই কোন আপনজন, নেই কোন পরিবার। মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত এখানেই আমাদের থাকতে হবে। বাবারা আমাদের কাছে এসেছে। খোঁজ খবর নিয়েছে। আমরা যেন পরিবার আর সন্তানের পরশ পেয়েছি। আল্লাহ, ইশ্বর যেন এদের ভাল করে।

গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়াল বলেন, ছাত্রলীগ শুধু রাজনৈতিক দল নয়। ছাত্রলীগ সাধারণ মানুষের আস্থার স্থল। ঈদে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতরা যে মনে করতে না পারে তাদের কেউ নেই। তাই আমরা এবারের ঈদ আশ্রিত মা-বাবাদের সাথে কাটালাম।

গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্যা বলেন, এ বৃদ্ধাশ্রমে হিন্দু ও মুসলমান সব ধর্মের লোক রয়েছেন। ধর্মীয় অসাপ্রদায়িকতার একটি বড় উদাহনর। এখানে সবাই একটি পরিবারের সদস্য হয়ে বসবাস করনে। ধর্মের কোন বিভেদ তাদের বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেনি। শুধু ঈদ নয় সব সময় আশ্রিত মা-বাবাদের পাশে থাকবে ছাত্রলীগ।

হাইশুর বৃদ্ধাশ্রমের তত্ত্বাবধায়ক আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, আমার এখানে এখন ২২ জন মা বাবা আশ্রিত রয়েছেন। বিভিন্ন জনের কাছে থেকে এক বেলার খাবার যোগার করে তাদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আজ পরিবার সন্তানহীন মা-বাবার সাথে ঈদ উদযাপন করেছে। এতে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও দু:খ কষ্ট ভুলেছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে এখানে আশ্রিত মা বাবারা একটু ভাল থাকতে পারবেন। সমাজের সকল বিত্তবানদের সহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত