ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

মা-বাবা-বোন হত্যায় অনুশোচনা নেই মেহজাবিনের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২১, ০২:২৯  
আপডেট :
 ২১ জুন ২০২১, ০৪:২৬

মা-বাবা-বোন হত্যায় অনুশোচনা নেই মেহজাবিনের

মা-বাবা-বোনকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেও মেহজাবিন ইসলাম মুনের (২৪) মনে কোনো অনুশোচনা নেই। বরং ভালো আছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর কদমতলী থানাধীন মুরাদপুর এলাকায় ঘুমের ওষুধ সেবনের মাধ্যমে অচেতন করে মা-বাবা-বোনকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যাকারী মেহজাবিন মুনকে রোববার আদালতে আনা হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানা তিনি।

কেন খুন করলেন, জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মেহজাবিন বলেন, ‘পরকীয়া এবং পারিবারিক ঝামেলার কারণে খুন করেছি।’

আপনার সঙ্গে আর কে ছিল? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আর কেউ না। আমি একাই তাদের খুন করেছি।’

মা-বাবা-বোনকে অনুশোচনা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মেহজাবিন মুন বলেন, ‘না। আমার কোনো অনুশোচনা হচ্ছে না। বরং আগের চেয়ে আরও ভালো আছি।’

মেহজাবিন মুনকে রোববার বিকাল ৩টার পর এজলাসে তোলা হয়। এজলাসে মুনকে স্বাভাবিকই দেখাচ্ছিল। হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কদমতলী থানার পরিদর্শক জাকির হোসেন। আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। পাশাপাশি এ ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামি মুন এবং তার স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম অরণ্যের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মেহজাবিন মুন গত শুক্রবার গভীর রাতে মা, বাবা ও ছোট বোনকে হত্যা করার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বলেন- ‘তিনজনকে খুন করেছি, তাড়াতাড়ি আসেন, তা না হলে আরও দুজনকে (স্বামী-সন্তান) খুন করব।’ চাঞ্চল্যকর এ কা-ের পর নিহত মাসুদ রানার বড় ভাই সাখাওয়াত হোসেন কদমতলী থানায় মুন ও অরণ্যকে আসামি করে মামলা করেন।

ওই মামলায় মেহজাবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার স্বামী শফিকুল আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে। সুস্থ হলে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর। পূর্বপরিকল্পিতভাবে মেহজাবিন এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশের ধারনা।

কদমতলী থানা পুলিশ জানায়. প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেহজাবিন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। নিহত মাসুদের বড় ভাই মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মাসুদ ২৬ বছর ধরে সৌদি আরব থাকে। বিয়ের পর থেকে মেহজাবিন ও তার স্বামী শফিকুল টাকা ও সম্পতির জন্য মাসুদের স্ত্রী মৌসুমীকে বিভিন্নভাবে জ্বালা-যন্ত্রণা দিত। মৌসুমী রাজি না হওয়ায় ছয় মাস আগে তাদের হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে মেহজাবিন দম্পতি। তিন মাস আগে মাসুদ দেশে ফেরে। এর পর পরিকল্পনা অনুযায়ী চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে। এর পর বাবা-মা ও বোনকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ছোটবেলা থেকেই মেহজাবিন ও তার বোনকে দিয়ে মা মৌসুমী দেহব্যবসায় বাধ্য করে। এ ছাড়া বাবা মাসুদ আরেকটি বিয়ে করে সংসার গড়েন। এসব ক্ষোভ থেকেই মেহজাবিন তাদের খুন করে বলে স্বীকার করেছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, টাকা-পয়সা ও সম্পতির প্রতি লোভ থেকে হত্যা করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জানা গেছে, এর আগে মেহজাবিন তার গৃহশিক্ষককে হত্যা করে ১ মাস ২২ দিন জেল খাটেন। ওই হত্যা মামলাটি ২০১৬ সালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ছিল। ওই মামলায় মেহজামিন, তার মা মৌসুমী এবং তার আরেক খালা আসামি। ওই মামলায় সর্বশেষ তারা জামিনে ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল-ওআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত