ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

টেকসই বেড়িবাঁধ চান উপকূলের সংসদ সদস্যরা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২১, ১৮:৪৩

টেকসই বেড়িবাঁধ চান উপকূলের সংসদ সদস্যরা
ছবি- সংগৃহীত

সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া সারাদেশের ন্যায় উপকূলীয় এলাকায় পৌছালেও টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে তারা আজ ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরাসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরাও।

তাদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে সুন্দরবনের পাশর্বর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরপর করোনা পরিস্থিতি এবং সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের আঘাত সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

তাই অবিলম্বে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, লবণাক্ততার আগ্রাসন রোধসহ সর্বোপরি উপকূলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে হাওর উন্নয়ন বোর্ডের ন্যায় 'উপকূল উন্নয়ন বোর্ড' গঠনের দাবি তোলেছেন তারা।

রোববার উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উপকূলের জনগণকে সুরক্ষায় করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের সংসদ সদস্য ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিয়ে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক কনভেনশনে বক্তারা এসব দাবি তোলেন।

বক্তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতি এবং সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের আঘাতে পর জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। বরং টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির অভাবে জনগণ দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিলেও অজ্ঞাত কারণে তা আটকে আছে। কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে তা খুবই ধীরগতিতে চলছে। ওই অঞ্চলের সংকট মোকাবেলায় বিশেষ বরাদ্দের দাবি থাকলেও জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।

বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ফেইথ ইন একশন ও লিডার্স এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের আয়োজিত এই কনভেনশনে সর্বসম্মতিক্রমে একটি ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। এতে সরকারের কাছে ৭টি দাবি জানানো হয়৷ এগুলো হলো-

১. টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে।

২. জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থ বাস্তবায়নে সমম্বয় করে উপকূলীয় এলাকার জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে সম্পৃক্ত করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৩. জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে সেখানকার জীবন-জীবিকা ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

৪. লবণাক্ততার আগ্রাসনের শিকার উপকূলের সুপেয় পানির সংকট নিরসনে স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। মৎস্য ও কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।

৫. বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবর সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সুন্দরবন ও আশপাশের ঐতিহ্যবাহি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের প্রসারের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. বর্তমান সরকার প্রণীত ডেল্টাপ্লান বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সাগর তীরবর্তী এলাকা সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সুপার ড্রাইভওয়ে নির্মাণ করতে হবে।

৭. উপকূলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে হাওড় উন্নয়ন বোর্ডের ন্যায় উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।

কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।

কনভেনশনে ভাচুয়ালী যুক্ত হন খুলনা-৫ আসনের এমপি সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের এমপি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা-২ আসনের মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-১ আসনের সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, খুলনা-৪ আসনের আব্দুস সালাম মূর্শেদী, বাগেরহাট-৪ আসনের মো. আমিরুল আলম মিলন, পটুয়াখালী-৩ আসনের এস এম শাহজাদা, সংরক্ষিত নারী আসনের সৈয়দা রুবিনা আক্তার, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত