ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

উত্তরায় কেয়ারটেকার সুবল হত্যার রহস্য উদঘাটন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৫:২১

উত্তরায় কেয়ারটেকার সুবল হত্যার রহস্য উদঘাটন

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় কেয়ারটেকার সুবল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ ২ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- মো. মাসুদ রানা ও মো. মিজানুর রহমান।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তাদের পরিকল্পনা ছিল গভীর রাতে কেয়ারটেকারকে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে রাখবে। বাড়ির মালিক ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যাবার সময়ে তারা বাসায় ঢুকে বাড়ির সদস্যদের জিম্মি করে চুরি-ডাকাতির কাজ করবে।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে নিহতের পরিহিত জামার পুড়িয়ে দেওয়া অংশ বিশেষ ও রক্তমাখা জামা উদ্ধার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে ঘটনাস্থল থেকে একপিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঁচি উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, গত ১১ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নং সেক্টরের ১০ নং বাড়ির কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল (৪৪) খুন হন। এ খুনের ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কিন্তু আমরা ঘটনার দুই দিনের মধ্যে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। উত্তরা পশ্চিম থানার একটি টিম গত ১২ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে খুনের সাথে প্রত্যক্ষ জড়িত মাসুদ ও মিজানকে গ্রেপ্তার করে।

হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার মাসুদ ঐ বাসায় ড্রাইভার হিসাবে কর্মরত ছিল। দেড় মাস আগে সে চাকরি ছেড়ে সিরাজগঞ্জ চলে যায়। সেখানে একটি লুঙ্গি কারখানায় মাইক্রোবাসের চালক হিসেবে কাজ নেয়। গ্রেপ্তার মাসুদ এর আগে প্রায়ই নিহত কেয়ার টেকারের রুমে ইয়াবা সেবন করত ও নারী নিয়ে এসে ভিকটিমের রুমটি ব্যবহার করতো। তাদের পরিকল্পনা ছিল, দারোয়ানকে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে বাসায় ঢুকে বাড়ির সদস্যদের জিম্মি করে চুরি-ডাকাতি করবে। এই উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তার মাসুদ নিহত কেয়ারটেকার সুবলের সাথে যোগাযোগ করে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রধরে গ্রেপ্তার মাসুদ কেয়ারটেকারকে জানায় সে ও তার চাচাতো ভাই ঢাকায় এসে রাতে তার রুমে থাকবে। সে মোতাবেক ১০ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় গ্রেপ্তাররা কেয়ারটেকারের রুমে আসে ও এবং সেখানে ইয়াবা সেবন করে।

তিনি আরো জানায়, গ্রেপ্তারদের পরিকল্পনা মোতাবেক রাত প্রায় সাড়ে ৩ টায় ঘুমন্ত কেয়ারটেকার হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে সে জেগে উঠে। রুমে থাকা একটি ধারালো কেঁচি ভিকটিমের গলায় ধরে তাকে চুপ থাকতে বলে। এরপর গ্রেপ্তার মিজান কেয়ারটেকারের গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে ধরলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মাসুদ রানা কেয়ারটেকারে গলায় ধারালো কেঁচিটি ঢুকিয়ে দেয়। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে মিজান ও মাসুদ কেয়ারটেকারের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, নিশ্চিত করার পর গ্রেপ্তাররা শক্তকরে ভিকটিমের হাত পা বাঁধে। এরপর রুমের বাইরে পানির ট্যাপে শরীরে লেগে থাকা রক্তের ছাপ ধুয়ে ফেলে এবং জামা-কাপড়ে রক্তের ছাপ মুছে ফেলার চেষ্টা করে।

পরিবর্তীতে গ্রেপ্তাররা মালিকের বাসায় লুণ্ঠনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে উক্ত স্থান ত্যাগ করে। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে নিজ গ্রাম সিরাজগঞ্জ চলে যায় বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত