ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বেসরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে টিকা দেয়ার পরামর্শ আনোয়ার খান এমপির

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২১, ২০:০৪  
আপডেট :
 ২৫ জুলাই ২০২১, ১৪:৪৩

বেসরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে টিকা দেয়ার পরামর্শ আনোয়ার খান এমপির
লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান।

করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার ব্যাপারে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সম্পৃক্ত করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার হোসেন খান।

শনিবার বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সঙ্কট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি শীর্ষক’ এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় এ পরামর্শ দেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমরা করোনা চিকিৎসা দিয়ে কেউ পয়সা উপার্জন করিনি। অথচ মানুষের কাছ থেকে কথা শুনেছি। বিভিন্ন টিভি, মিডিয়া ও আমাদেরকে ছোট করা হয়েছে। আপনি জানেন, করোনা চিকিৎসা একটা ব্যয়বহুল চিকিৎসা। কিন্তু চিকিৎসার আগে কেউ টাকার কথা জিজ্ঞাস করেন না। শুধু ভর্তির তদবির করেন।কিন্তু চিকিৎসা নিয়ে যখন বাড়ি যান তখন বিল দিতে গিলে আমরা খারাপ হয়ে যাই। এত কথা শুনেও আমরা মানুষের জীবন বাঁচাতে পাশে আছি।

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারকে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, টিকা দেয়ার সময় বাড়াতে হবে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা টিকা দিলে অনেক বছর লেগে যাবে। এজন্য এর পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গণটিকা দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আমাদেরকে (বেসরকারি হাসপাতাল) সম্পৃক্ত করতে চাইলে আমরা হব। আমরা আপনাদের সাথে থাকতে চাই। আর টিকা দিলে যদি কোন টাকা-পয়সা না নিতে হয়, আমরা নেবো না। অসুবিধা নেই। আমরা জনগণের সাথে তো ছিলাম। আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাই। আমরা মানুষের পাশে আছি।

আনোয়ার হোসেন খানের এই বক্তব্যের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এ বিষয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এবং যথাযথ জায়গায় আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।

এর আগে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান বলেন, সরকার থেকে আমরা (বেসরকারি হাসপাতাল) কিছু পাই না। আমার হাসপাতালে সরকারি ব্যবস্থাপনার চিকিৎসা জন্য যে একটা বিল দিলাম। সামান্য। দেড় বছরেও আমার বিলটার কোন খবর নাই। আমিও ছেড়ে দিয়েছি। ডিজি মহোদয়কে এখন আর আমি টেলিফোনও করি না। কেনো করি না, মনের একটা দুঃখ। আমার মতো একজন এমপি, আমার কথার যদি দাম না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষের কথার কি দাম থাকবে?

প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাড়া আমাদের (বেসরকারি হাসপাতাল) কেউ কোন খোঁজ-খবর রাখেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমাদের কথা সবসময় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনে রাখেন, অন্য কেউ মনে রাখেন না। সেকারণে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

তিনি বলেন, করোনা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ। কিন্তু আমাদের জন্য সব সময়ই ঢেউ। আজকে দেড় বছরের অধিক সময় এর সাথে আমরা আছি। কিন্তু আমরা কোন দিন করোনা থেকে বের হতে পারি নাই। আর করোনা রোগী ছাড়াও আমরা অন্যান্য রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা থ্যাঙ্ক লেস জব হিসেবে সমাজে বসবাস করি। আমরা করোনার সাথে জনগণকে যে বাঁচানোর চেষ্টা করছি, এজন্য একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদেরকে মনে রাখেন। অন্য কেউ আমাদের খুব একটা মনে রাখেন না।

সরকার থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা কিছু পায়নি উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমরা সরকার থেকে কিছু পায়নি। আমরা যেসমস্ত জীবন হারিয়েছি, যেসমস্ত ডাক্তার আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, আমরা নিজের উদ্যোগে তাদেরকে সহযোগিতা করেছি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমরা যারা ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে আছি, সেখানে আমাদের নাম নেই। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা স্বাধীনতা বিরোধী, এদের মধ্যে ১৬ জন পেয়েছেন। এরপরও আমাদের কষ্ট রাখা উচিত নয়। কিন্তু আমাকে এবং মুবিন খানকেই তো মানুষ প্রশ্ন করেন। কিন্তু আমরা জবাব দিতে পারি না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আনোয়ার হোসেন খান আরো বলেন, আমরা চাই আমাদের একটা মূল্যায়ন হোক। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা যারা করোনায় আক্রান্ত, তাদের চিকিৎসার জন্য আমরা ২৫ হাজার টাকা দেই। কিন্তু আমরা সরকার থেকে কিছু পাই না। যারা মারা গেছেন তাদেরকেও আমরা কিছু দিতে পারি না। আপনার থেকে কিছু পাই না। আমরা নিজে থেকে দেই। আমরা মনে করি, আপনি যদি আমাদেরকে ইনক্লুড করেন তাহলে আপনার কোন ক্ষতি হবে না।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্যে রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, জাপান ইষ্ট ওয়েষ্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিপিএমসিএ’র চেয়ারম্যান ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, গ্রীণ লাইফ মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিপিএমসিএ’র সহ-সভাপতি ডা. মাঈনুল আহসান, পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং বিপিএমসিএ’র সহ-সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং পরিচালক, এফবিসিসিআই ও প্রেসিডেন্ট (ইনচার্জ), বিসিআই প্রীতি চক্রবর্ত্তী, সিআইপি এবং বিপিএমসিএ’র যুগ্ম সম্পাদক মো. হাবিবুল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এমএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত