ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনাকালে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২১, ২৩:৪৫  
আপডেট :
 ২৬ জুলাই ২০২১, ০০:২৭

করোনাকালে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি
ফাইল ছবি।

করোনাকালে নাস্তানাবুদ বাংলাদেশে ফের উঁকি দিচ্ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী এইডিস মশার উপস্থিতি। চলতি জুলাই মাসের ২৫ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩০৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১০৫ জন।

এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু সন্দেহে মারা গেছেন তিনজন। যদিও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেনি। সারাদেশে রোগটির তেমন প্রকোপ না থাকলেও রাজধানীবাসী এডিস মশাবাহী রোগটি নিয়ে বেশ চিন্তিত। কারণ ২০১৯ সালের দুঃসহ স্মৃতি তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৭৯ জন। এর মধ্যে আজ ৪৬০ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাদের ৪৫৪ জনই ভর্তি রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে। আর বাকি ছয়জনের মধ্যে গাজীপুরে ৩ জন, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা এবং খুলনায় একজন করে রোগী ভর্তি।

২০১৯ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এর আগের সব বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারায়। আর সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডেই পাওয়া যাচ্ছে এডিসের লার্ভা। কোথাও কোথাও মশাটির ঘনত্ব বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। জুলাই এর চেয়ে আগস্টে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার খবরে মশা মারতে নেমেছে দুই সিটি কর্পোরেশন। অসময়ে মশা মারার পদক্ষেপ যে কাজে আসেনি তার প্রমাণ আক্রান্ত বাড়ার এই পরিসংখ্যান।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, করোনার মধ্যে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকলে রোগী ব্যবস্থাপনা করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। মশকনিধনে দুই সিটি কর্পোরেশনের তৎপরতা চোখে পড়ছে না। ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে জনগণের সচেতনতাও জরুরি।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান, এডিসসহ অন্যান্য মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে যে এলাকায়, অর্থাৎ যে বাসাবাড়িতে রোগী পাওয়া যাবে, হাসপাতাল থেকে সেই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা নিয়ে তার বাসাসহ ওই অঞ্চল চিহ্নিত করে বিশেষ চিরুনি অভিযান চালানো হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তদর থেকে এই বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। সেই অনুযায়ী আপনারা ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেবেন।’

আরো পড়ুন-

ডেঙ্গু নিয়ে অবহেলা না করার অনুরোধ

ডেঙ্গু রোগীর তালিকা করে অভিযান: তাজুল ইসলাম

রাজধানীর হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত