ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে চমেকে এক নারী ভর্তি

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ২২:৪০  
আপডেট :
 ২৮ জুলাই ২০২১, ২৩:০৯

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে চমেকে এক নারী ভর্তি

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো বিরল ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে এক নারী আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া ষাটোর্ধ্ব ওই নারী গত চারদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তার উপসর্গগুলো দেখে চিকিৎসকরা তাকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে ধারণা করলে এটি আদৌ ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কিনা তারা এখনও নিশ্চিত নন।

জানা যায়, গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন ষাটোর্ধ্ব গৃহিনী ফেরদৌস বেগম। চলতি মাসের ৩ তারিখ তিনি কোভিড টেস্টে পজিটিভ হন। ১৫ জুলাই কোভিড নেগেটিভ হলেও উনার নানা শারিরীক অসুবিধা দেখা দেয়।

পরে স্বজনরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসকরা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এই রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছে ধারণা করছেন।

গত চারদিন ধরে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে হাসপাতালে রাখা হলেও প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকটের কারণে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও পরিবারের লোকজন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ফোকাল পার্সন ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, এক নারী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তিনি এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের রোগী হিসেবে চিহ্নিত নন। আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠিয়েছি। ৩ দিন পর এর ফলাফল জানা যাবে।

জানা যায়, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি ছত্রাক-জনিত রোগ। মিউকোরমাইকোসিস খুবই বিরল একটা সংক্রমণ। মিউকোর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত এই ছত্রাক পাওয়া যায় মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও শাকসবজিতে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই ছত্রাক মাটি এবং বাতাসে এমনিতেই বিদ্যমান থাকে। এমনকি নাক ও সুস্থ মানুষের শ্লেষ্মার মধ্যেও এটা স্বাভাবিক সময়ে থাকতে পারে। এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ফুসফুস যেহেতু দুর্বল থাকে, সেজন্য তাদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ফেরদৌস বেগমের চিকিৎসায় এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশন প্রতিদিন ৫ ভায়াল করে মোট ১৪ দিন প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। মাকে বাঁচাতে ব্যয়বহুল এই ওষুধ এখন হন্যে হয়ে খুঁজছেন সন্তানরা। কিন্তু তা এখনও পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত এই নারীর স্বামী পাঁচদিন আগে করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন।

ফেরদৌস বেগমের ছেলে মো. বেলাল হোসাইন বলেন, পাঁচদিন আগে আমি বাবাকে হারিয়েছি। এখন আমার মা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার জন্য এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি খুঁজছি। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছেনা। প্লিজ আপনারা এই ওষুধের সন্ধান দিন। যত টাকা লাগে আমরা দিব। আমার মাকে বাঁচাতে চাই।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা.সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এই রোগে যে ইনজেকশন প্রয়োজন তা এখনও দেশে নেই। ঢাকায় এক রোগীকে যে ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়েছিল তা কার্যকর প্রমাণিত হয়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত