মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা, তিন ছেলেকে কুপিয়ে জখম
বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৬:০৫ আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৬:০৭
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন তালুকদারকে (৮০) কুপিয়ে-পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া তার তিন ছেলেসহ একই পরিবারের ৪ জনকে ধারালো অস্ত্র ও টেঁটা দিয়ে কুপিয়েছে প্রতিপক্ষ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে এ হামলার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
আহতরা হলেন- হামলায় নিহত মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনের ছেলে বিপ্লব তালুকদার, সোহাগ তালুকদার ও জুয়েল তালুকদার এবং বিপ্লবের স্ত্রী রোজিনা বেগম।
মুক্তিযোদ্ধার লাশের সাথে থাকা তার মেয়ে সোনিয়া আক্তার বলেন, তার বাবাকে প্রতিপক্ষ নুরুল ইসলামসহ সহযোগিরা মিলে বেদম মারধর করে। এরপর ধারালো অস্ত্র ও টেঁটা দিয়ে কোপায়। এতে তার বাবার মৃত্যু হয়।
মেডিকেলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, বেদম মারধর এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের ফলে রক্তক্ষরণে দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়।
মেডিকেলে চিকিৎসাধীন বিপ্লব জানান, দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার নুরুল ইসলাম সেপাহীগংদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। আজ খুব ভোরে আকস্মিকভাবে নুরুল ইসলাম প্রায় ৩০/৩৫ জনের মতো লোক নিয়ে ওই জমিতে চাষাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে তার বাবা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় নুুরুল ইসলামের সাথে বাবার বাকবিতণ্ডা হয়।
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম ও তার সহযোগিরা বাবাকে বেদম মারধর এবং কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে আমরা ভাইরা সেখানে গেলে আমাদের ধারালো অস্ত্র ও মাছ মারার টেঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তাদের আক্রোশ থেকে রক্ষা পায়নি আমার স্ত্রীও। এরপর স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বিপ্লব অভিযোগ করেন, নুরুল ইসলাম গতরাত থেকে লোকজন জড়ো করে। রাতেই বিষয়টি জানতে পারলেও বিরোধপূর্ণ জমি দখলের জন্য লোক জড়ো করছে তা বুঝতে পারিনি। শুধু লোক জড়ো না, এর সাথে ধারালো অস্ত্র, মাছ মারার টেঁটা ও লাঠিসোটাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল প্রতিটি মানুষের হাতে। আমাদের কুপিয়ে তারা সকলে ওই জমি থেকে সটকে পড়ে। ঘটনাটি খুব ভোরে হওয়ায় বাড়ির স্বজন থেকে শুরু করে বেশীরভাগ গ্রামবাসী ঘুমে ছিলেন। পরবর্তীতে আমাদের ডাকচিকৎকারে গ্রামবাসী টের পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখান থেকে মেডিকেলে পাঠানো হয়।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি মো. আরশেদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। হামলাকারীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে