লকডাউনে বাড়ছে ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২১, ২০:৪৮
করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশব্যাপী চলছে লকডাউন। সরকারের বিধি-নিষেধে বন্ধ রয়েছে সকল শিল্প কারখানা। ফলে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্ডার সময় মতো পাঠাতে পারার অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। এছাড়া অর্ডার বাতিল, স্থগিত এবং নতুন অর্ডার না হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। এতে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে।
অন্যদিকে কারখানাগুলো বন্ধ থাকায় অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন কর্মজীবী মানুষরা। লকডাউনে বিপাকে পড়া এসব মানুষের মধ্যে একধরণের ক্ষোভ বিরাজ করছে। এভাবে চলতে থাকলে ‘পেটের দায়ে’ লকডাউন না মানার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
সরকারের স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সম্প্রতিকালে দেশে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কঠোর লকডাউন বা শার্টডাউনের পরামর্শ দেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে করোনা নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার।
লকডাউন প্রথমে ৭ জুলাই পর্যন্ত থাকলেও পরে তা আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। মাঝখানে ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত (আট দিন) শিথিল করা হয়। এরপর ২৩ জুলাই থেকে আবারো কঠোর লকডাউন চলমান রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনায় সবচেয়ে বড় আঘাত আসছে তৈরি পোশাক খাতের ওপর। খাতটি বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি উভয় ক্ষেত্রেই করুণ দশা। মহামারীর কারণে গত বছর থেকে বৈশ্বিক চাহিদা কমায় ক্রয় আদেশ কমে যায়। যেটি সম্প্রতি কাটিয়ে উঠে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় চলমান লকডাউনে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বতর্মানে পোশাক খাতের মৌসুম চলছে। বছরের বড় অর্ডারগুলো হয় এই সময়টাতে। তাই পোশাকখাতকে বাচাঁতে শ্রমিকদের টিকা প্রদান করে দ্রুত খুলে দেয়া দরকার।
উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, কারখানা দ্রুত খোলে না দেয়া হলে বিদেশি ক্রেতারা অনেকেই রফতানি আদেশ বাতিল করবেন। নতুন রফতানি আদেশ না হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোশাক উদ্যোক্তা বলেন, আমরা ভয়াবহ বিপর্যয়ে রয়েছি। এভাবে কারখানা বন্ধ থাকলে পোশাক খাত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলতে পারবো না। এখন দ্রুত না কারখানা খুললে পরবর্তিতে পোশাকখাত ঘুরে দাঁড়াতে বেশ বেগ পেতে হবে।
এদিকে কারাখানা বন্ধ থাকায় কর্মজীবী মানুষরাও দুঃসহ জীবন পার করছেন। কাজ বন্ধ, বেতন ভাতা না পেলে কিভাবে চলবেন সেই চিন্তায় ঘুম নেই।
ঢাকার মতিঝিল এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করেন আব্দুল আওয়াল। থাকেন নয়াপল্টন এলাকায়। বুধবার কথা বলতে চাইলে ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
আওয়াল বলেন, দুই ছেলে এক মেয়েসহ ছয়জনের পরিবার আমার। ঈদে বেতনভাতা যা পাইছি সেগুলো তো শেষ। ধার করে বাজার করতে বের হইছি। এভাবে কারখানা বন্ধ থাকলে ঋণ করে সংসার চালামু কিভাবে?
ঢাকার পাশ্ববর্তি এলাকার একটি পোশাক কারখানার সহকারী ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এভাবে কারখানা বন্ধ থাকলে সবাই মহা বিপদে পড়বে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/ওয়াইএ