ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

হাসপাতালে আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে মোবাইল চুরি

  বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:৩১

হাসপাতালে আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে মোবাইল চুরি

হঠাৎ করেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মূল ভবনের দোতলার পূর্ব পাশে আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিছু লোক আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় আতঙ্কে দোতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত পূর্বপাশের বিভিন্ন ওয়ার্ডে থাকা রোগী ও স্বজনরা তাড়াহুড়ো করে নিচে নামতে থাকেন। এই ফাঁকে ওয়ার্ড থেকে একাধিক মোবাইল চুরি হয়ে যায়। এভাবেই হাসপাতালে আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড থেকে এ গুজব ছড়ানোর সূত্রপাত ঘটে। এমন গুজবে আতঙ্কে যারা নিচে নামছিলো তারা কেউই আগুন লাগার দৃশ্য দেখেনি এমনকি কোথায় লেগেছে তাও বলতে পারেনি।

শিশু ওয়ার্ডের স্টাফ আবদুল জব্বার বলেন, তাদের ওয়ার্ডে কোন আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় একজন অধ্যাপকসহ চিকিৎসকরা ওয়ার্ডেই ছিলেন। দুইজন লোক আকস্মিক আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করলে সবাই ওয়ার্ডের ভেতর থেকে বাইরে দৌড়ে চলে যায়। আর এ সময়ের মধ্যেই ওয়ার্ডের ভেতর থেকে দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়।

হাসিনা বেগম নামে অপর একজন বলেন, ঘটনার আগে এক শিশু রোগীর স্বজন মোবাইলে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। সকেটে চার্জার প্রবেশ করাতে গিয়ে স্পার্ক করে, তবে কোন আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি, ওই সময় নারী একটু ভয় পেয়ে আঁতকে উঠলে পাশে থাকা লোকজন আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে দেয়।

হাসপাতালের আনসার সদস্যরা বলেন, আগুন লাগার কথা শুনে কেউ আর তা যাচাই করেনি, রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌড়ে হাসপাতাল ভবনের বাইরে চলে আসেন। হাসপাতালের স্টাফরা তাদের বারণ করলেও তারা শোনেনি। পরে অনেক বুঝিয়ে আগুন যে লাগেনি তার নিশ্চয়তা দিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের স্ব স্ব ওয়ার্ডে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর বিভিন্ন জায়গা থেকে মোবাইল চুরির মৌখিক খবর আসতে শুরু করে।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, মোবাইল বা টাকা পয়সা চুরি যাওয়ার ঘটনায় এখনো কেউ হাসপাতাল প্রশাসনের কাছে লিখিত জানায়নি। তি‌নি ব‌লেন, ঘটনাটি এক ধরনের প্রতারণামূলক। আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে রোগীদের মালামাল চুরির চেষ্টা চালানো হয়েছে। মৌখিকভাবে কিছু মোবাইল খোয়া যাওয়ার কথা শুনছি, তবে কেউ লিখিত দেয়নি।

তিনি বলেন, বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পর্যালোচনা করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর কেউ ঘটাতে না পারে। সেই সঙ্গে আজকের ঘটনা পরিকল্পিত হয়ে থাকলে, আর তা তদন্তে বেরিয়ে এলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল সদর স্টেশনের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা আব্বাস উদ্দিন বলেন, ফোনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে রোগীসহ সাধারণ মানুষকে হাসপাতাল ভবনের নিচে জড়ো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। তবে কেউই কোথায় আগুন লেগেছে তা বলতে পারেনি। তারপর হাসপাতাল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে খোঁজ চালিয়েও আগুনের সূত্রপাত পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত