ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

লালমনিরহাটে গুচ্ছগ্রামের অধিকাংশ ঘরই পরিত্যাক্ত

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৩২  
আপডেট :
 ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:৪৩

লালমনিরহাটে গুচ্ছগ্রামের অধিকাংশ ঘরই পরিত্যাক্ত
দহগ্রাম ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের ১৩০টি ঘরের মধ্যে ৮০টি ঘরই পরিত্যাক্ত

ভারতের ভেতরে একখণ্ড বাংলাদেশ নামে পরিচিত দহগ্রাম ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের ১৩০টি ঘরের মধ্যে ৮০টি ঘরই ৪ বছর ধরে পরিত্যাক্ত। বাকি ঘরগুলোতে যারা বসবাস করছে তাদের প্রতিনিয়ত নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বন্যার পানিতে অধিকাংশ ঘরের মাটি সরে গেছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের একমাত্র রাস্তাটিও ধসে গেছে। ধসে গেছে সেতুর সংযোগ সড়কও।

রাস্তা ও সেতু মেরামত না করায় এবং ঘরের মাটি পুনরায় ভরাট না করায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে বলে জানায় এলাকাবাসী।

পাটগ্রাম উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চার বছর আগে গুচ্ছগ্রামটি নির্মাণে মাটি ভরাট করতে ব্যয় করা হয়েছে ৫০০ মেট্রিক টন চাল। ঘর নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। এ ঘরগুলো ১৩০টি ভূমিহীন পরিবারকে বরাদ্দ দেয়া হয়।

গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারীর অভিযোগ, গুচ্ছগ্রামে মাটি ভরাটের কাজ করেছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা (পিআইও) ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। নিয়ম অনুযায়ী নিরাপদ দূরত্ব থেকে শ্রমিকদের দিয়ে মাটি সংগ্রহ করে ভরাট করার কথা ছিল। কিন্তু তারা গুচ্ছগ্রামের পাশ থেকেই ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে মাটি ভরাট করেছিল। এ কারণে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে ঘরের বালু ধসে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদও করেছিলেন, কিন্তু কোনো কাজে হয়নি। গুচ্ছগ্রামের পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করার কথা থাকলেও তারা শুধু জিও-ব্যাগ ফেলে বরাদ্দের সব টাকা আত্মসাৎ করেছে।

গুচ্ছগ্রামের সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, তাদের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক ও সেতুর সংযোগ সড়কটিও বন্যার পানিতে ধসে যাওয়ায় কষ্ট করে বসবাস করতে হচ্ছে। এ নিয়ে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালিয়ে যারা জীবনযাপন করেন, তারা গুচ্ছগ্রামের ঘর ফেলে অন্য জায়গায় বসবাস করছে।

তিনি আরও বলেন, ধসে যাওয়ায় সেতুর সংযোগ সড়কে আমরা নিজেরাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছি।

গুচ্ছগ্রামের এক বাসিন্দা শামসুল ইসলাম জানান, মাটি ধসে যাওয়ায় ঘরগুলোতে বসবাস করা যাচ্ছে না। তিনি একটি ঘর পেয়েছেন কিন্তু তিন মাসও থাকতে পারেননি। এখন অন্য জায়গায় বসবাস করছেন।

দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, 'গুচ্ছগ্রামটি তিস্তা নদীর পাড়ে। এ কারণে বন্যার সময় এ গ্রামটি প্লাবিত হয়। রাস্তা ও সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারীরা সমস্যায় পড়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য শ্রমিকের পরিবর্তে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে মাটি ভরাট করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পে গাইড ওয়াল ধরা ছিল না। তাই আমরা বাঁশের পাইলিং করে ও জিও-ব্যাগ ফেলে গুচ্ছগ্রামের মাটি ধসে যাওয়া আটকানোর চেষ্টা করেছিলাম।

পাটগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা উত্তম কুমার নন্দী বলেন, এটা অনেকদিন আগের কাজ, তাই তেমন কিছু মনে নেই। তবে কাজটি ইউপি চেয়ারম্যান করেছিলেন।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। বর্তমানে সরকার গুচ্ছগ্রামগুলো নিয়ে কাজ করছে। দহগ্রামের সড়ক ও সেতু শিগগিরই মেরামত করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত