ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

৭০ বছর অপেক্ষার পর মা-ছেলের দেখা

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৫৮  
আপডেট :
 ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:১৯

৭০ বছর অপেক্ষার পর মা-ছেলের দেখা
৭০ বছর পর মা-ছেলের দেখা। ছবি: প্রতিনিধি।

হারিয়ে যাওয়ার ৭০ বছর পর একমাত্র ছেলেকে পেয়ে শেষ হলো শতবর্ষী মা মঙ্গলের নেছার অপেক্ষার পালা। ১০ বছর বয়সে হারিয়ে যায় কুদ্দুছ মুন্সি। খোঁজাখুঁজির পর সবাই হাল ছেড়ে দিলেও ছেলেকে ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন মা। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সে স্বপ্ন পূরণ হলো মা মঙ্গলের নেছার। ১০ শিশু কুদ্দুছ মুন্সি এখন ৮০ বছরের বৃদ্ধ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে ছেলে কুদ্দুছ মুন্সিকে ফিরে পান মঙ্গলের নেছা।

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আশ্রাফবাদ গ্রামের বোন ঝড়না বেগমের বাড়িতে মা ছেলের এই মিলন হয়। ছেলেকে ফিরে পেয়ে ১১০ বছর বয়সী মা আবেগ আপ্লুত হয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই দৃশ্য দেখে সেখানে উপস্থিত সবার চোখে পানি চলে আসে।

মঙ্গলের নেছা বলতে থাকেন, ‘কুদ্দুছ তুই একদিন ফিরে আসবি এটা আমি বিশ্বাস করতাম। আল্লাহর কাছে তোকে ফিরে পাওয়ার এই দোয়াই করেছি। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন।’

জানা যায়, সাত বছর বয়সে কুদ্দুছ মুন্সির বাবা কালু মুন্সি মারা যান। ৭০ বছর আগে পুলিশ সদস্য চাচার সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রাজশাহীর বাগমারায় বেড়াতে এসে হারিয়ে যান ১০ বছর বয়সী আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি। অনেক খোঁজা-খুঁজির পরও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

গত ১২ এপ্রিল আত্রাই উপজেলার সিংশাইর গ্রামে এমকে আইয়ূব নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডিতে কুদ্দুছ মুন্সির হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা জানিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেন। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। ৫ সেপ্টেম্বর ওই ভিডিওর সূত্র ধরে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কয়েকজন যোগাযোগ করে আইয়ূবের সঙ্গে। তারা সেখানে যান এবং মায়ের সঙ্গে কথা কুদ্দুছ মুন্সিকে ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেন। এ সময় মঙ্গলের নেছা ছেলের হাতে থাকা কাটা দাগের চিহ্ন দেখে তাকে নিজ সন্তান হিসেবে শনাক্ত করেন।

কুদ্দুছ মুন্সি বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়ার পর রাজশাহী জেলার আত্রাই উপজেলার সিংশারা গ্রামের সাদিক মিয়ার স্ত্রী আমাকে ছেলের মত লালন পালন করেন। বিয়ের পর আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছি। কিন্তু মনে মনে আমার মা ও বোনদের খোঁজার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল একদিন আমার মার সন্ধান আমি পাবো। মায়ের বুকে ফিরতে পেরে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ এখন আমি। বাকি জীবনটা মার সঙ্গেই থাকবো।’

বাংলাদেশ জার্নাল/জেবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত