ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

কারাগারে নয়, বাবা-মায়ের জিম্মায় ৭০ শিশু

  সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৯:১৫  
আপডেট :
 ১৩ অক্টোবর ২০২১, ২০:৩১

কারাগারে নয়, বাবা-মায়ের জিম্মায় ৭০ শিশু
মা-বাবার কাছে ফেরত পাঠানো শিশুরা। ছবি প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জে ৭০ শিশুকে লঘু অপরাধের মামলায় কারাগারে না পাঠিয়ে বাবা-মায়ের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দিয়েছেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সুনামগঞ্জ শিশু ও মানব পাচার আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী।

মারামারি ও মাদক বহনসহ লঘু অপরাধের ৫০ মামলায় ৭০ শিশুকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে জড়ানো হয়েছিল। এসব শিশুদের আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হতো। এ কারণে শিশুদের ভবিষ্যত ও শিক্ষা জীবন ব্যাহত হচ্ছিল। শিশুদের এসব থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।

তবে তাদের জন্য ছয়টি শর্ত জুরে দিয়েছেন আদালত। শর্তেগুলো হলো, এসব শিশুর দুইটি করে ভালো কাজ আদালতের দেওয়া ডায়েরিতে লিখে রাখতে হবে, বছর শেষে ডায়েরি আদালতে জমা দিতে হবে, মা-বাবাসহ গুরুজনদের আদেশ মানতে হবে, তাদের সেবাযত্ন ও কাজে সাহায্য করতে হবে, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও ধর্ম-কর্ম করতে হবে, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে, মাদক থেকে দূরে থাকা ও ভবিষ্যতে অপরাধের সঙ্গে না জড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে সকল শিশুর হাতে ফুল তুলে দেন আদালতের কর্মীরা।

অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী বললেন, সুনামগঞ্জের শিশু আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. জাকির হোসেন যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। ৫০ টি মামলায় ৭০ জন শিশুকে তাদের মা-বাবার জিম্মায় শর্ত সাপেক্ষে ফেরত পাঠিয়েছেন। শর্তগুলো পালনের মাধ্যমে শিশুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। রায় ঘোষণার সময় শিশুদের মা-বাবা ও স্বজনরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আইনুল ইসলাম বাবলু বললেন, বিজ্ঞ আদালতের রায়ে শিশুরা সংশোধিত হবার সুযোগ পেল। অপরাধ করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসবে তারা। সাধারণত আমরা দেখি শিশুরা কারাগারে থাকলে অন্য অপরাধীদের সাথে মিশে আরো অপরাধী হয়ে যায়। অ্যাডভোকেট মতিয়া বেগম এই রায়কে চমৎকার উল্লেখ করে বললেন, অপরাধের সঙ্গে শিশুরা যাতে আর জড়িত না হয়, সেই ইচ্ছা থেকেই হয়তো আদালত এই রায় দিয়েছেন।

পরিবারে কাছে ফিরে যাওয়া শিশুরা আদালতের আদেশ ঠিক মতো প্রতিপালন করছেন কি না তা এক বছর পর্যবেক্ষণ করবেন জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. সফিউর রহমান।

সফিউর রহমান বলেন, 'আদালত ৫০ মামলায় ৭০ শিশুকে ছয় শর্তে প্রবেশনে এক বছরের জন্য মুক্তি দিয়েছেন। আদালতের শর্ত ঠিকমত প্রতিপালন করছে কি না তা দেখে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবার দায়িত্ব আমার। আমি সেটি পালন করার চেষ্টা করবো এবং শিশুরা যাতে সংশোধিত হয় সেইভাবেই দায়িত্ব পালন করবো।'

বাংলাদেশ জার্নাল/জেবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত