ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

কাপড় ও আচারের আড়ালে চলতো আইস ব্যবসা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৫১  
আপডেট :
 ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭:০১

কাপড় ও আচারের আড়ালে চলতো আইস ব্যবসা
খোকন ও তার সহযোগী

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে প্রায় ৫ কেজি আইস (অবৈধ মাদক ক্রিস্টালমেথ), বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ টেকনাফ আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা খোকন ও তার একজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

র‍্যাব বলছে, হোছেন ওরফে খোকন এই চক্রের মূল হোতা। সে মিয়ানমার থেকে তার কাপড় ও আচারের ব্যবসার আড়ালে মাদকের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতো।

শনিবার ভোরে র‍্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা এবং র‍্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল তাদের গ্রেপ্তার করে।

এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কেজি ৫০ গ্রাম আইস, ০১টি বিদেশী পিস্তল, ০৫ রাউন্ড গোলাবারুদ, ৩টি মোবাইল, দেশী/বিদেশী সীমকার্ড এবং মাদক ব্যবসায় ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। জব্দ করা আইসের বাজার মূল্য আনুমানিক সাড়ে ১২ কোটি টাকা।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক হলো আইস বা ক্রিস্টাল মেথ। ক্রিস্টাল মেথ বা আইসে ইয়াবার মূল উপাদান এমফিটামিন এর পরিমান অনেক বেশী থাকে। তাই মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুন ক্ষতিসাধন করে এই আইস। এটি সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিস্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষণ্নতার ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

কমান্ডার মঈন বলেন, শারিরীক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে এটির নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এই মাদকের প্রচলনের ফলে তরুণ-তরুণীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হয়। এই মাদকে আসক্ত হয়ে মাদকাসক্তরা নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে।

গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে টেকনাফ কেন্দ্রিক কয়েকটি মাদক চক্র বেশ কিছুদিন ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদকদ্রব্য আইস বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। এর ফলশ্রুতিতে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাব জানায়, তারা টেকনাফ কেন্দ্রিক সিন্ডিকেটের সদস্য। এই চক্রটি বিগত প্রায় কয়েক বছর ধরে অবৈধ মাদক ইয়াবার কারবার করে আসছে। সিন্ডিকেটে ২০-২৫ জন যুক্ত রয়েছে।

র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, সিন্ডিকেটের সদস্যরা সাধারণত নৌপথ ব্যবহার করে মাদকের চালান দেশে নিয়ে এসে থাকে। চক্রটি ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত থেকে বিগত কয়েক মাস ধরে আইস পাচার করে নিয়ে আসছিলো। ঢাকার উত্তরা, বনানী, গুলশান, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তাদের সিন্ডিকেট সদস্য রয়েছে বলে জানায়।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞসাবাদে র‍্যাব কর্মকর্তা মঈন জানায়, গ্রেপ্তার মো.হোছেন ওরফে থোকন এই চক্রের মূল হোতা। সে তার কাপড়/আচারের ব্যবসার আড়ালে মাদকের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতো। তার নামে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ রফিক এই চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য এবং টেকনাফে অটোরিক্সা চালকের ছদ্মবেশে মাদক পরিবহণ এবং স্থানান্তর করতো।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে মায়ানমারের মাদক কারবারিরা মাদকের বিস্তার বাড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এসব মাদকের বড় চালান ধরা পরলে তাদের কোন টাকা পরিশোধ করতে হয় না। এর জন্য মাদককারবারীদের ধরা পরলেও বেগ পেতে হয় না।

আরও পড়ুন-আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা গ্রেপ্তার, বড় চালান জব্দ

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত