ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘মোস্তফা’ পুরস্কার নিতে ইরান যাচ্ছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী

  শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ২০:১৯

‘মোস্তফা’ পুরস্কার নিতে ইরান যাচ্ছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী
ডানে বিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান তাপস

বিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান তাপস ‘মোস্তফা’ পুরস্কার গ্রহণের জন্য শনিবার আমেরিকা থেকে ইরানের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য তিনি ইরানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কয়েকদিন থাকবেন। মহানবী (সা:) এর পবিত্র আগমন দিবসে পুরস্কারটি আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে তুলে দেয়া হবে।

বিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান তাপসের ছোট ভাই ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জামিল হাসান দুর্জয় তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) ভাইয়ের সাথে পুরস্কারের বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের পরপরই ভাইকে চিঠি দিয়ে ইরান সরকার বিষয়টি জানিয়েছে।

ওআইসি (Organisation of Islamic Cooperation) প্রদত্ত ‘মোস্তফা’ পুরস্কারে মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশের পদার্থবিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান তাপস। জাতিসংঘের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্ধশতাধিক মুসলিম রাষ্ট্রের এ সংগঠন পদার্থবিজ্ঞানে অবদান রাখার জন্য ২০২১ সালে যৌথভাবে তাকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। ১৩ অক্টোবর ইরান কর্তৃপক্ষ এ পুরস্কার ঘোষণা করে।

আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, পদার্থবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষক ড. এম জাহিদ হাসান তাপসের সাথে যৌথভাবে কামরুন ওয়াকার নামে ইরানের এক বিজ্ঞানীও একই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। চার কোটি টাকারও বেশি অর্থমূল্য রয়েছে পুরস্কারটির। ইতোমধ্যে ড. জাহিদ হাসান তাপসকে চিঠি দিয়ে মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার। তাপস বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী।

জাহিদ হাসান তাপসের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জামিল হাসান দুর্জয় আরও জানান, তার ভাই বিজ্ঞানী ড. জাহিদ হাসান তাপস রাজধানীর ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১৯৮৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় হন। পরে ১৯৮৮ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ছোটবেলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাহিদ হাসান তাপসেকে কোলে নিয়ে তার বাবাকে বলেছিলেন ‘তোমার ছেলে একদিন বিশ্বে নাম করবে।’ বঙ্গবন্ধুর সেই বাক্যটি প্রতিনিয়ত পরিবারের সদস্যদের মনে করিয়ে দিচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন তার ফেসবুক আইডিতে উল্লেখ করেন, বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সকল দেশের সকল ধর্মের মানুষ। নিউটন, আইনস্টাইন, আব্দুস সালাম, স্টিফেন হকিংসহ বিজ্ঞানীদের কাজ দ্বারা যুগ যুগ ধরে যত মানুষ জন্মাবে সকলে উপকৃত হবে। ড. এম জাহিদ হাসান তাপস 'Weyl fermion seminetal' এর ওপর কাজের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

তিনি দুঃখ করে উল্লেখ করেন, নিজ দেশ বাংলাদেশ তাকে আজও পুরস্কৃত করেনি। সত্যি কথা বলতে কি, বিজ্ঞানীদের পুরস্কৃত করার জন্য সেই মাপের কোনো পুরস্কার ফাউন্ডেশন আজও গঠিত হয়নি।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, 'মোস্তফা' পুরস্কারটি ২০১৫ সাল থেকে ইরানে যাত্রা শুরু হয়। মুসলিম বিশ্বের নোবেল হিসেবে পুরস্কারটি পরিচিত। তথ্য প্রযুক্তি, চিকিৎসা বিজ্ঞান ও ন্যানো টেকনোলজিসহ ৪টি ক্যাটাগরিতে অবদান রাখার জন্য এ পুরস্কার দেয়া হয়।

অধ্যাপক ড. এম জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্যবিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এর আগে পরীক্ষাগারে গবেষণা করে দীর্ঘ পঁচাশি বছরের প্রতীক্ষার পর খোঁজে পেয়েছিলেন 'ভাইল ফার্মিয়ন কণা'। এ আবিস্কারের মাধ্যমে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। পদার্থবিজ্ঞানে তার অসামান্য অবদানের জন্য আমেরিকার এনার্জি ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে ২০২০ সালে তিনি 'আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স অ্যাওয়ার্ড' পান।

বিজ্ঞানী ড. জাহিদ হাসান তাপস আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর-৩ আসনের প্রয়াত সাংসদ আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রহমত আলীর বড় ছেলে। তার বাড়ি গাজীপর জেলার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর পৌর শহরে।

ওআইসির 'মোস্তফা' পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়ায় শ্রীপুরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত