ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ

  ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৩১

ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ

ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলন।

ঝিনাইদহের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডলের ‘বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে’ ঝিনাইদহের ক্ষুদ্র, মাঝারি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তাদের। একাধিক ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন।

শরিফুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও নাসিম উদ্দীনসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সুচন্দন মন্ডল সহকারী পরিচালক হিসেবে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই যোগদানের পর থেকেই জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন বীজের দোকান, তেল পাম্প, ব্রেড ফ্যাক্টরি, চানাচুর কারখানা, রেস্টুরেন্ট, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বেকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে দশ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকাও মাসোহারা নেন।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নাম ব্যবহার করেও এই কর্মকর্তা অর্থ আদায় করেন বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সুচন্দন মন্ডল ব্যবসায়ীদের অফিসে ডেকে নিয়ে জরিমানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তার চাহিদা পূরণ না হলে ওই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করাসহ তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।

ঝিনাইদহ শহরের অগ্নিবীনা সড়কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শহীদ বীজ ভান্ডারের মালিক শহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সুচন্দন মন্ডলের কারণে এখন ব্যবসা করাই দুরূহ হয়ে পড়েছে। তার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে ব্যবসার পুঁজি হারানোর উপক্রম হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে বীজের দোকানে (শহীদ বীজ ভান্ডার) অভিযান চালিয়ে ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৫শ’ টাকা জেলা তথ্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকের মাধমে আদায় করেছেন।

এ সময় জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিনি নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। ভয়ভীতি, হুমকি দিয়ে সুচন্দন মন্ডল ‘কথা বললে ১ লক্ষ না বললে ৫০ হাজার টাকা’ জরিমানা করেন।

সৎ ব্যবসায়ীদের কাছে সুচন্দন মন্ডল এখন ‘মূর্তিমান আতঙ্ক’ বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

ঝিনাইদহ জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মো. নাসিম উদ্দীন বলেন, সুচন্দন মন্ডলের চাঁদাবাজির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এরপরও তার বেপরোয়া আচরণের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, শ্রীকৃষ্ণ ভান্ডারের মালিক সুব্রত সাধুখাঁ, জেলা পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুশীল অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক সুশীল কুমার, বাগাট মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক সুব্রত ঘোষসহ আরও অনেক ব্যবসায়ী।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী সুব্রত সাধুখাঁ বলেন, অন্যায়ভাবে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন সুচন্দন মন্ডল। এ কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন তিনি।

সুশীল কুমার অভিযোগ করে বলেন, ব্যক্তিসুবিধা না পেয়ে সুচন্দন মন্ডল কোনো কারণ ছাড়াই ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

সদরের গান্না বাজারের সততা বেকারীর মালিক সবোদ মিয়া জানান, সুচন্দন মন্ডলের আক্রোশের শিকার হয়ে ১ মাস দোকান সিলগালা করে রাখেন তিনি।

ব্যবসায়ীরা এই কর্মকর্তার শাস্তিমূলক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। তা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান ঝিনাইদহের ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত