ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

পিবিআই’র হাতে তিন প্রতারক ধরা

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২১:০৯  
আপডেট :
 ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২১:৩৯

পিবিআই’র হাতে তিন প্রতারক ধরা
ছবি: প্রতিনিধি

গাইবান্ধা থেকে তিন প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের সদস্যরা। যশোর সদর উপজেলার পাগলাদাহ গ্রামের এক নারীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিজেদের ফেরেস্তা, জ্বীনের বাদশ পরিচয়ে বোকা বানিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ সোনার অলঙ্কারসহ ৩ লাখ ৭২ হাজার ৫শ' টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দেবেত্তর রামনাথপুর গ্রামের ওসমান সরকারের ছেলে সেলিম সরকার (৩২), সুন্দইল গ্রামের মৃত আকাম উদ্দিনের ছেলে দুদু মিয়া (৫৫) এবং মথুরাপুর গ্রামের জিতেন্দ্রনাথ মহন্তার ছেলে তাপস মহন্তা (৩৮)।

যশোর সদররের পাগলাদহ গ্রামের সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশনার অফিসার এএনএম সোহরাব হোসেন জানিয়েছেন, তারা মেয়ে সাজনিন খাতুন গত বছর এইচএসসি পাশ করেছে। বর্তমানে সে বাড়িতে থাকে। গত অক্টোবর মাসের ৩ তারিখ দিবাগত রাত ১টার দিকে একটি নম্বর থেকে তার মেয়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নিজেদের 'আল্লাহর কুদরত' থেকে এসেছে বলে পরিচয় দেয়। নিজেদের 'ফেরস্তা' বলে পরিচয় দিয়ে নানা কথা বলে। এরপর বাড়িতে থাকা জায়নামাজ ও কোরআর শরীফ নিয়ে বসতে বলে সাজনিনকে।

সোহরাব হোসেন আরও জানান, মোবাইলফোনে তার স্ত্রীর অসুস্থতা ও পরিবারের অন্যান্য সমস্যার কথা বলতে থাকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এতে তার মেয়ে মন নরম হয় এবং তাদের (প্রতারকদের) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন হয়। মেয়েকে নানা প্রলোভন দেখায় এবং কাউকে কিছু বলতে নিষেধ করে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে জায়নামাজ ও উট কেনার কথা বলে তার মেয়েকে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলে। তার মেয়ে ভয় পেয়ে এবং পরিবারের কোন সদস্য যাতে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়ে সেজন্য তার (বাবার) বেতন এবং জিপিএফ থেকে উঠানো সাড়ে ৯২ হাজার টাকা দুইটি বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দেয়। এরপর ফের তারা নানাভাবে কথা বলতে থাকে মেয়ে সাজনিনের সাথে।

গত ৬ অক্টোবর নতুন খয়েরতলা মাধ্যমিক স্কুলের গেটের ভেতর পূর্ব পাশের মেহগুনি গাছের গোড়ায় তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের সোনার হনা রেখে আসতে বলে। প্রতারকের কথামতো মোট ৪ ভরি সোনার অলঙ্কার রেখে আসে সাজনিন খাতুন। এরপর তাকে কল করে বলে, পালবাড়ির মোড়ের সিঙ্গার কোম্পানির শো-রুমের সামনে আমগাছের পাশের বিদ্যুতের খাম্বার গোড়ায় পটেটো চিপসের প্যাকেটের ভেতরে একটি সোনার মূর্তি আছে। ওই মূর্তি বাড়িতে রাখতে বলে।

কথা অনুযায়ী সাজনিন খাতুন সেখানে গিয়ে মূর্তিটি বাড়িতে নিয়ে দেখে সেটি পিতলের। পরে সাজনিন তাকে (বাবাকে) জানায় এবং তিনি বিষয়টি শুনে বুঝতে পারেন প্রতারকচক্রের কবল পড়েছে সাজনিন। তিনি পুলিশের সাথে আলোচনা করে যশোর কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। পরে পিবিআই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে ওই তিন প্রতারককে আটক করে। তারা প্রতারণার মাধ্যমে ওই টাকা ও সোনার গহনা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া শনিবার তারা তিনজনই জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইনের আদালতে এই বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত