ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাল্টাবাগানে মিশ্র ফসল চাষে আমিরুলের সফলতা

  আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৫৫  
আপডেট :
 ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:০০

মাল্টাবাগানে মিশ্র ফসল চাষে আমিরুলের সফলতা
ছবি: প্রতিনিধি

তিন বছর আগে নিজের এক একর জমিতে ২৮৪টি মাল্টার চারা রোপণ করেন কৃষক আমিরুল ইসলাম। এরপর সেই বাগানেই মাল্টার চারাগুলোকে ঘিরে চাষ করেছেন ১১ রকম ফসল। এসব ফসল ফলিয়ে বাজারজাত করে ভালো আয় করেন তিনি, দেখেছেন সফলতার মুখ। আমিরুলের এমন ব্যতিক্রমী আবাদ এবং সফলতা দেখে অবাক এলাকার মানুষ।

এখন তার বাগানে মাল্টার ফলনও আসতে শুরু করেছে। ফলে ভালো আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের ক্ষুদ্র বাঁশবাড়ী গ্রামের আমিরুল ইসলাম। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ক্ষুদ্র বাঁশবাড়ী গ্রামের প্রবেশপথেই স্থানীয় পাকা সড়কঘেঁষা মাল্টাবাগানে গমের চাষাবাদ হচ্ছে।

সড়ক থেকে নেমেই এরপর ক্ষেতের ভেতরে যেতেই চোখে পড়ে গমের পাশাপাশি আলাদা করে আলুর চাষ। আর একটু এগোতেই দেখা যায় লাউয়ের মাচা। তার পাশেই পটোল ও শিমের চাষাবাদ। আরও একটু সামনে এগোতেই ফসল পেঁয়াজ, রসুন ও হলুদের আবাদ। এছাড়া কাঁচা মরিচ, পুঁইশাক, লাপাশাক ও লেবুর আবাদও করা হচ্ছে ওই বাগানে।

আমিরুল বলেন, ‘শুরুটা ছিল তিন বছর আগে। রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথের আগ্রহে এবং তার সার্বিক সহযোগিতায় এক একর আবাদি জমিজুড়ে ২৮৪টি মাল্টার গাছ রোপণ করি। এসব গাছের বয়স এক বছর হলে দেখি প্রতিটি মাল্টা গাছ থেকে আরেক গাছের মাঝখানে প্রায় ১০ বর্গফুট জায়গা ফাঁকা থাকছে। পরে চিন্তা করি, ছোট হাল দিয়ে চাষ দিলে এখানে আবাদ করা যাবে। প্রথমে আবাদ করলাম বোরো ও আমন ধান, পরের বছর আলু ।‘

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর বোরো-আমনের পর জমিটাকে বিভিন্নভাবে ভাগ করলাম। প্রথম ভাগে রোপণ করলাম গম, দ্বিতীয় ভাগে আলু এবং তৃতীয় ভাগে লাউ, শিম, হলুদসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও মসলাজাতীয় ফসল। মাল্টা চাষ করলেই যে অন্য ফসল অচাষযোগ্য, তা কিন্তু নয়। আপনি চেষ্টা করলেই পারবেন। এতে আপনার মাল্টাগাছেরই উপকার বেশি হবে। অন্যান্য ফসলে দেওয়া সারগুলো মাল্টাগাছও পাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, মাল্টাগাছের শিকড় যেন কাটা না যায়।’

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় আমিরুলই প্রথম এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা সেখানে মাল্টা চারা সরবরাহ করেছি। সেইসঙ্গে কৃষি অফিস থেকে তাদের বাগানে প্রযুক্তিগত সকল সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। বাগান থেকে প্রথম বছরই তিনি লক্ষাধিক টাকার মাল্টা বিক্রয় করতে পারবে এমনটা আশা করা যায়।

এলাকাবাসী বলেন, ‘আমিরুল ইসলাম ডিগ্রি পাস করা শিক্ষিত ছেলে। সে যে এভাবে এ এলাকার নতুন ফসল মাল্টাবাগান করতে পারবে এবং পাশাপাশি মাল্টাবাগানের মধ্যেই আবার বুদ্ধি করে এতগুলো ফসল ফলাতে পারবে, তা আমাদের বিশ্বাস হয়নি প্রথমে। সরেজমিন দেখে আমরা অবাক হয়েছি। আসলে চেষ্টা করলে সবই সম্ভব।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ‘সমগ্র উপজেলা মিলিয়ে মোট ১৬ হেক্টর জমিতে ৩০০ জন মাল্টাচাষি রয়েছেন। এর মধ্যে ক্ষুদ্র বাঁশবাড়ী গ্রামের আমিরুল ইসলাম মাল্টার বাগানেই গম, আলুসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করছেন। এতে আমরাও অবাক হয়েছি, তার চেষ্টা দেখে।

বাংলাদেশ জার্নাল/পিএল

  • সর্বশেষ
  • পঠিত