ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
ছবি: প্রতিনিধি

নতুন ধরন ওমিক্রনসহ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অগণতান্ত্রিক এবং দমনমূলক আখ্যায়িত করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞ মহল যখন বলছেন- উম্মুক্ত স্থানের চেয়ে বদ্ধ স্থানে কোভিড বেশি ছড়ায় তখন বাংলাদেশ সরকার ১১ দফা নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে উম্মুক্ত স্থানে জনসমাগম নিষিদ্ধ করে বদ্ধ স্থানে তা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এই অযৌক্তিক সরকারি সিদ্ধান্ত অবশ্যই কোভিডের সংক্রমণ রোধের লক্ষ্যে নেয়া হয়নি। বিরোধী দলগুলোর চলমান প্রতিবাদ- প্রতিরোধ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ ও দমন করার জন্য করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যাবে, হাট-বাজার, যানবাহন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে, দোকান-পাট, শপিং মল খোলা রাখা যাবে, সারাদেশে মেলার আয়োজন করা যাবে এবং মুজিব বর্ষ পালনের কর্মসূচি দীর্ঘায়িত করা যাবে সেখানে উম্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তিপূর্ণ সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না। কাজেই এই নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অগণতান্ত্রিক এবং দমনমূলক বলেই আমরা মনে করি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ বিস্তারের প্রথম দিকে সরকারি অবহেলা এবং সরকারের মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতাদের দায়িত্বহীন আস্ফালন দেশের জনগণকে বিপদাপন্ন করেছে। পরবর্তীতে কোভিড নিয়ন্ত্রণের ও চিকিৎসা প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও সমন্বয়হীনতা সংকটকে জটিলতর করেছে। যার ফলে হাজারো মানুষ এমনকি স্বাস্থ্যসেবা দানকারী ব্যক্তিগণ অকালে মৃত্যুর শিকার হয়েছেন।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সবাই এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধে দলমত নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে তৎপর হলেও বরাবরের মতো এদেশের সরকার কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা বাস্তবায়নে জনগণকে সম্পৃক্ত না করার আত্মঘাতি প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।’

বিএনপি জনগণকে ভালবাসে এবং জনগণের জন্য রাজনীতি করে বলেই বিভিন্ন সময়ে করোনার সংক্রমণ এবং তার অনিবার্য ক্ষতি সম্পর্কে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণকে সচেতন এবং ওষুধ, অক্সিজেন সরবরাহ ও স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। এমনকি সংক্রমণের বৃদ্ধি রোধের লক্ষ্যে দলীয় কর্মসূচি বন্ধ রেখে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। এখনও আমাদের কাছে জনস্বার্থই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সরকার কোভিড-১৯ এর ডেল্টা ও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে যতটা না আগ্রহী, তার চেয়েও বেশী আগ্রহী বিরোধী দল দমনের সুযোগ খোঁজায়।’

১১ দফা নির্দেশাবলী জারি হওয়ার আগেও বিএনপিকে দেশের বহু স্থানে সমাবেশ করতে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে এই নেতা বলেন, ‘১৪৪ ধারাও জারি করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘দমনপীড়নে চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যায়নি বরং তা আরো বেগবান হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ ও অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসাসহ অনির্বাচিত, দুর্নীতিবাজ ও বিশ্ব দরবারে মাতৃভূমির মর্যাদা বিনষ্টকারী সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের অর্থনৈতিক, সমাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলছে এবং চলবে।’

তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থ এবং প্রাসঙ্গিক সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের চলমান সভা সমাবেশের তারিখ পুনঃনির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা বিএনপি ও অঙ্গ দলগুলোর সকল কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জেলার নেতৃবৃন্দকে পুনঃনির্ধারণের তারিখে সভা-সমাবেশ সফল করার জন্য প্রস্তুতি অব্যহত রাখার আহ্ববান জনাচ্ছি।’

এময় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকারের বিধিনিষেধের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠান সাংঘর্ষিক। সুতরাং এটা যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই ব্যাপারে সন্দেহ থাকার আর কোনো কারণ নাই।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/পিএল

  • সর্বশেষ
  • পঠিত