ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

করোনা:

গাজীপুরে মাছের মেলায় মাস্কহীন মানুষের ঢল

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২৩:৩৪

গাজীপুরে মাছের মেলায় মাস্কহীন মানুষের ঢল
ছবি- প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইলে পৌষের শেষ দিন শুক্রবার ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় স্বাস্থবিধি উপেক্ষা করে দিনভর হাজারো মানুষের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের এই বিষয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। এ আয়োজনে ছিলোনা কোনো পারমিশনও।

সরকার করোনা মহামারীর পর ওমিক্রনের ক্রমবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ১১দফা স্বাস্থ্যবিধি জারি করলেও শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বিনিরাইলে ওই মেলা চলছে। অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই কোন স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই, নেই কোন মাস্কেরও ব্যবহার। মাছের মেলাকে ঘিরে সেখানে বস্ত্র, হস্ত, চারু-কারু, প্রসাধনী, ফার্নিচার, খেলনা, তৈজসপত্র, মিষ্টি ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যের দোকান বসে। ওই এলাকায় মানুষ যেন উৎসবে মেতে ওঠেছেন।

সহস্রাধিক দোকানে মাছের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন মাছ বিক্রেতারা। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট-বড় সাইজের মাছ নিয়ে এসছেন ব্যবসায়ীরা। সামুদ্রিক চিতল, বাঘাইড়, আইড়, বোয়াল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইকলা, রূপচাঁদা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশী মাছ। প্রতিবছর পৌষের শেষ দিনে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইলে বসে মাছের মেলা। এ মেলা থেকে সাধ্য অনুযায়ী মাছ কিনে জামাইরা শ্বশুরবাড়িতে যান।

এবার মেলায় বড় বড় (৩০/৪০ কেজি ওজনের) মাছের দোকানে ক্রেতাদের বেশি ভিড় দেখা গেছে। এদিনের মেলায় ৪০ কেজির এক সবচে’ বড় বাঘাইড়ের দাম ৪৫ হাজার টাকা ওঠেলেও বিক্রেতা মাছটির দাম চাইছেন ৬৫ হাজার টাকা।

আয়োজকরা জানান, মেলায় গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। মাছের সঙ্গে মেলায় আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি, বস্ত্র, হস্ত ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যের হাট বসে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আয়োজক মেলায় স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, আমরা বার বার ক্রেতা-বিক্রেতাকে মাইকিং ও প্রচারণা করেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। কেউ কারো কথা শুনেন না।

মেলায় কথা হয় শ্রীপুর উপজেলার লিটন দাসের সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি কালীগঞ্জের জামালপুর গ্রামের জামাই। প্রতিবছরই তিনি এ মেলায় যান। এবার তিনি শ্বশুরবাড়িতে নেওয়ার জন্য সাড়ে ১৯হাজার টাকার চিতল ও আইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনেছেন। এ মাছ কিনতে গিয়ে দেখি মেলায় কোথাও কোন স্বাস্থ্যবিধি নেই, নেই কারো মধ্যে মাস্কের ব্যবহার। এতে তিনি এলাকায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশংকা করছেন।

মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও জামালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য কিশোর আকন্দ জানান, ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হওয়া বিনিরাইলের মাছের মেলা এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। প্রতিবছর পৌষের শেষ দিনে এ মেলা বসে। এ মেলা কালীগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত। তবে ক্রেতা/বিক্রেতাদের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ এবং মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ মেলায় অংশ নেয়ার অনুরোধ করলেও শেষ পর্যন্ত তা ঠিক রাখা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশ আমাদের নিষেধ করলেও এক বছর আগেই ঘোষিত এ মেলা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। কয়েকদিন আগেই দুর-দূরান্ত থেকে মানুষ এলাকায় পৌঁছে গেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আস্ সাদিক জামান জানান, বিষয়টি তার নলেজেই নেই। এ ব্যাপারে তার কোন পারমিশনও ছিলনা। তবে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিভাবে কারা এভাবে মেলার আয়োজন করেছেন। কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান বলেন, মানুষের মধ্যে করোনা ও ওমিক্রনের কোন ভয় নেই। মাস্ক পরার ব্যাপারে সতর্ক করা হলেও মানুষ তা মেনে চলছে না। তারা স্বাস্থ্য বিধি না মানলে আমরা কি করবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত