প্রত্যাশিত জয়ে উচ্ছ্বসিত নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ

উৎসবমুখর পরিবেশে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সঙ্গে ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হ্যাটট্রিক জয় লাভ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।

তার এই জয়ে উচ্ছাসিত আওয়ামী লীগসহ নারায়ণগঞ্জবাসী। তার জয়কে প্রত্যাশিত জয় বলে মন্তব্য করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর আচরণকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের আদর্শ বলেও মন্তব্য করেন তারা।

তীব্র তাপপ্রবাহ: ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি 

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, 'আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম আইভী লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবে। ইভিএম পদ্ধতি অনেকেই বুঝে নাই। বিশেষ করে বয়স্ক ও নারীরা। যার কারণে ভোট কাস্ট ধীরগতিতে হয়েছে। তবু আমরা ভালো ভোট পেয়েছি, মানুষ এসেছে। আমারা জয়ের প্রত্যাশা করেছিলম আর তাই হয়েছে।'

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, 'এ জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার, নৌকা মার্কার। যা আশা ভরসায় প্রধানমন্ত্রী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নৌকা মার্কা দিয়েছিল আমরা তা পুরণ করতে পেরেছি। আইভী যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচন করেছে ইনশাআল্লাহ সে প্রতিশ্রুতি সে পূরণ করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আপনারা হয়তো জানেন, তৈমুর আলম খন্দকার ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাবার কর্মী ছিলেন। পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে আইভী তৈমুর আলম খন্দকারের বাড়ি মিষ্টি নিয়েগেছে। সে মনে করে, রাজনীতি এক জায়গায়, সম্পর্ক আরেক জায়গায়। আইভী গিয়ে বলেছেন, চাচা যা হবার হয়েছে। এখন নির্বাচন শেষ চলেন সব ভুলে যাই। চাচা হিসেবে আমি আপনার পরামর্শ নিয়ে কাজ করবো।' আইভীর এই আচরণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তুব্য করেন তিনি।'

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর রাজনৈতিক আচরণকে আদর্শিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু।

তিনি বলেন, 'আইভী একজন সফল রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, একজন সফল নেত্রীও বটে। তার কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়া তা প্রমাণিত। নির্বাচনে যা হয়, আইভীর দিকে বিভিন্ন আক্রমণাত্মক বক্তব্য ছুড়ে দেয়া হয়েছে, অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আইভীর তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা কোনো আক্রমণ করেনি। সাবলীলভাবে নিজের প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। প্রতিপক্ষের আপত্তিকর মন্তব্যে, কোনো আপত্তিকর মন্তব্য করেনি। এটাই হওয়া উচিত, এটাই আদর্শিক রাজনীতিবিদের বৈশিষ্ট্য।'

আইভীর এ আচরণ তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে আকৃষ্ট করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগেরসহ সভাপতি আদিনাথ বসু বলেন, 'আমরা যা প্রত্যাশা করেছিলাম তাই হয়েছে। আমরা আরও বেশি প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু ইভিএম এ ভোট হওয়ায় কাস্টিং অনেক স্লো হয়েছে। তানাহলে আমরা লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতাম। তারপরও মানুষ ভোট কেন্দ্রে গেছে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে, কোনো সহিংসতা হয়নি। এতেই আমরা সন্তুষ্ট।'

এ জয়কে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার উন্নয়নের বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা।

তিনি বলেন, 'এ জয় নেত্রীর কারণে, নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে তার উন্নয়নের কারণে জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে। নেত্রীর উন্নয়নে সন্তুষ্ট হয়ে জনগণ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে।'

আইভীর রাজনৈতিক আচরণকে তার পারিবারিক শিষ্টাচার বলে মন্তব্য করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান।

তিনি বলেন, 'নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিজয় হয়েছে। এ বিজয় নারায়ণগঞ্জের মানুষের বিজয়। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসী কোনো ষড়যন্ত্র, কোনো পেশিশক্তি, কোনো বিশেষ পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকতে চায় না। এ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের অপশক্তিগুলো, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিপক্ষের সকল শক্তি একত্রিত হয়েছিল স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে পরাজিত করার জন্য। কিন্তু তা হয়নি, নারায়ণগঞ্জে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির জয় লাভ করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী পারিবারিক যে শিক্ষা পেয়েছেন, যে শিষ্টাচার পেয়েছেন রাজনৈতিক প্রাঙ্গণে, তার আচারণে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তিনি সব সময় শত্রুকে, মিত্রতে রূপান্তর করেন।'

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ