ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩১ মিনিট আগে
শিরোনাম

কী রয়েছে ইসি গঠন আইনে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৩০  
আপডেট :
 ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৫৮

কী রয়েছে ইসি গঠন আইনে

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ আজ সংসদে উত্থাপন করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিলটি আনা হয়েছে। বিলটি উত্থাপিত হলে তা আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত সোমবার (১৭ জানুয়ারি) এ আইনটি মন্ত্রীসভায় অনুমোদন দেয়া হয়।

জানা গেছে, সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের জন্য বিলটির সময় ৭ দিন দেয়া হয়েছে এবং যত দ্রুত সম্ভব বিলটি পাস করা হবে। এটি পাস হওয়ার পরেই নতুন নির্বাচন কমিশনের আলোকে নিয়োগ করা হবে।

সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ সংক্রান্ত কোনো আইন প্রণয়ন হয়নি। রাষ্ট্রপতি তার সাংবিধানিক ক্ষমতার অংশ হিসেবে ইসি নিয়োগ দিয়ে আসছেন। সর্বশেষ দুটি কমিশন নিয়োগের সময় রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়ার পাশাপাশি সার্চ কমিটি গঠন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন।

এবারও ইসি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়েছেন। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই সংলাপ বর্জন করেছে।

এদিকে এবার ইসি গঠন প্রক্রিয়ার শুরুতে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে আইন করার প্রস্তাব করা হলেও সরকার শুরুতে সেদিকে গুরুত্ব দেয়নি।

ইসি গঠনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন এত কম সময়ের মধ্যে প্রণয়ন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে আগের অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, নতুন কমিশন তারা সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করবেন। পরবর্তী সময়ে তারা আইনটি প্রণয়ন করবেন। তবে, শেষ পর্যন্ত আইনটি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাবিত আইনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ ও এর পাশাপাশি সার্চ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইতোপূর্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি নিয়োগেরও বৈধতা দেয়া হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।

সিইসি ও ইসি হওয়ার যোগ্যতার ব্যাপারে বিলে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে কোনো ব্যক্তিকে সুপারিশ করার ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে। সেগুলো হলো- প্রার্থীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, নূন্যতম ৫০ বছর বয়স হতে হবে এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

প্রস্তাবিত আইনে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য ছয়টি অযোগ্যতার কথাও বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হওয়া, দেউলিয়া হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি না পাওয়া, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২ এর অধীনে কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হওয়া ও আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না এমন পদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকা ব্যক্তিরা অযোগ্য বলে গণ্য হবে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

এছাড়াও খসড়া আইনে সার্চ কমিটির (অনুসন্ধান কমিটি) কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।

এই অনুসন্ধান কমিটি সিইসি এবং কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুইজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের দশ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে বলে খসড়া আইনে বলা হয়েছে।

সার্চ কমিটির ব্যাপারে বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশের জন্য ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন।

সার্চ কমিটির সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন- প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই জন বিশিষ্ট নাগরিক। তিন জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটির সভার কোরাম হবে।

বাংলাদেশ জার্নার/এআর/কেএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত