ঢাকা-চট্টগ্রামের ১৬ ট্রেনের যাত্রা বাতিল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:২৮ আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৩৬

রেলওয়েতে রানিং স্টাফদের আন্দোলনের জেরে লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টার (ক্রু) স্বল্পতার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামের ১৬টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
|আরো খবর
বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আনসার আলী।
তিনি বলেন, ক্রু সংকট ও করোনার কারণে চট্টগ্রামের বেশকিছু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। ক্রু সংকট কেটে গেলে সেগুলো চালু করা হবে।
জানা যায়, ঢাকায় আপ-ডাউন ১০টি ও চট্টগ্রামে আপ-ডাউন ৬টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বাতিলকৃত ট্রেনগুলো হলো, লালমনিরহাট-সান্তাহার লালমনিরহাট ২০/১৯, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা (সকাল) ২১৩/২১৪, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা (দুপুর) ২১৯/২২০, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা (বিকেল) ২২৯/২৩০, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা (রাত) ২৩৩/২৩৪, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জোড়া শাটল ট্রেন ১৩১/১৩২, ১৩৫/১৩৮, ১৪১/১৪২।
এর আগে মঙ্গলবার থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ। ওইদিন রাতে নির্দিষ্ট এসব ট্রেনের যাত্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (ডিএমই লোকো) মো. ওয়াহিদুর রহমান সিআরবির কন্ট্রোলার অফিসে এ আদেশ পাঠান।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে এক জরুরি বৈঠকে ঘোষণা দেয়া হয় সৃষ্ট মাইলেজ জটিলতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে ৩১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে কর্মবিরতিতে যাবেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। পরে ঘোষণা আসে ২৫ জানুয়ারি থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি ট্রেন চালাবেন না তারা। এরই জেরে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে মোট ১৬টি ট্রেনের চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
মাইলেজ জটিলতা কেন!
মূলতঃ রেলের সৃষ্টির শুরু থেকেই রেলওয়ে রানিং স্টাফরা ‘মাইলেজ’ রেলওয়ে কোডে ‘পার্ট অব পে’ হিসাবে রেলওয়ে কোড এবং ম্যানুয়াল বিধান মতে নিয়মিত মাসিক বেতন ও অর্জিত মাইলেজ সংযুক্তভাবে পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে হঠাৎ রানিং স্টাফদের মাইলেজ বেতন বাজেট থেকে আলাদা করে টিএ খাতে সংযুক্ত করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই টিএ খাতে আর্থিক বরাদ্দ কম থাকায় সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। জটিলতা নিরসনে পরবর্তীতে মাইলেজের জন্য ‘মাইলেজ ভাতা’ নামের আলাদা কোড খোলা হয়। যেখানে আইবাস প্লাস সিস্টেমে রানিং কর্মচারীদের অর্জিত মাইলেজ সর্বোচ্চ ৩ হাজার মাইল বা ৩০ দিনের বেশি অর্ন্তভুক্ত করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় অসন্তোষ বাড়ছে রানিং স্টাফদের মধ্যে।
সর্বশেষ গত বছরের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শামীম বানু শান্তি স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চলন্ত ট্রেনে দৈনিক ১০০ কিলোমিটার কিংবা তার চেয়েও বেশি দায়িত্ব পালন করলেও ওই দিনের বেতনের ৭৫ শতাংশের বেশি মাইলেজ ভাতা পাবেন না সংশ্লিষ্ট রানিং স্টাফ। আর মাস শেষে এই মাইলেজ মূল বেতনের বেশি হবে না। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর ৪ নভেম্বর ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে বিক্ষোভ জানায় লোকোমাস্টাররা। এ সময় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে থেকে বিলম্বে যাত্রা শুরু করে বিভিন্ন রুটের ট্রেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ