ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

একমাস হেলপারি করে চালক বনে যায় মনির

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৪০  
আপডেট :
 ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৪০

একমাস হেলপারি করে চালক বনে যায় মনির

রাজধানীর মগবাজার মোড়ে বেপরোয়া বাস চালানোর ফলে দুই বাসের চাপায় এক কিশোরের নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় বাসচালক মো. মনির হোসেন (২৭) এবং মো. ইমরানকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‍্যাব জানায়, মনির বাসের ড্রাইভার নয়, প্রায় এক মাস আগে থেকে আজমেরী গ্লোরী গাড়ির চালকের সঙ্গে ঐ গাড়িতে দৈনিক মজুরিতে হেলপারি শুরু করে তিনি। তবে মাঝে মধ্যে বাসও চালাতো।

এদিকে ঘটনার দিন চালক গুলিস্তানে এসে গাড়িটি হেলপার মনির হোসেন এর দায়িত্বে দিয়ে যায় এবং মনির গাড়ি চালিয়ে মগবাজার মোড়ে নিয়ে আসে। মগবাজার মোড়ের সিগন্যাল ছেড়ে দেয়ায় দ্রুত গাড়ি দুইটি পরবর্তী স্টপেজে যেতে প্রতিযোগিতা শুরু করে। কারণ আগে যে পৌঁছাতে পারবে সেই অপেক্ষারত বেশি সংখ্যক যাত্রীদের বাসে নিতে পারবে।

অসুস্থ এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এক গাড়ি অপর গাড়িকে ওভারটেক করার সমেই বাস চাপায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রাজধানীর পল্টন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা সড়ক ও পরিবহন আইনে রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। র‌্যাব জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে তাদের গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য দেয়।

গ্রেপ্তার মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে খন্দকার আল মঈন জানান, এর আগে সে ৫ বছর যাবৎ মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত ছিলো মুনির। গত ৩ মাস আগে সে বাংলাদেশে তার নিজ গ্রামের বাড়ি ভোলাতে আসে এবং প্রায় দেড় মাস আগে ঢাকাতে কর্মসংস্থানের জন্য আসে। প্রায় এক মাস আগে থেকে আজমেরী গ্লোরী গাড়ির চালকের সঙ্গে ঐ গাড়িতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে হেলপারি শুরু করে। তবে মাঝে মধ্যে বাস চালাতো বলেও জানায় মনির। গত ২০ জানুয়ারি প্রায় ৪ টার দিকে আজমেরী গ্লোরী পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৫৭৮৭) সদরঘাট থেকে গাজীপুর চন্দ্রার উদ্দেশ্যে গাড়ির মূল চালক চালিয়ে নিয়ে আসে।

এর মধ্যে চালক গুলিস্তানে এসে গাড়িটি হেলপার মনির হোসেন এর দায়িত্বে দিয়ে যায় এবং মনির গাড়ি চালিয়ে মগবাজার মোড়ে নিয়ে আসে।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাব জানায়, মগবাজার মোড়ের সিগন্যাল ছেড়ে দিলে দ্রুত গাড়ি দুইটি এগিয়ে যাচ্ছিলো, তাদের উদ্দেশ্য ছিলো পরবর্তী স্টপেজে আগে পৌঁছে অপেক্ষারত বেশি সংখ্যক যাত্রীদের বাসে নিতে পারবে। এমতাবস্থায় অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এক গাড়ি অপর গাড়িকে ওভারটেক করার সময় দুই গাড়ির মাঝে পড়ে ওই কিশোর। এই ঘটনার পরপরই গাড়ির দুই চালক মনির হোসেন এবং ইমরান হোসেন বাস দুটি রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

র‍্যাব মুখপাত্র বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মামলার দুই নং আসামী মো. ইমরান হোসেন জানায়, সে ১০ থেকে ১২ বছর যাবৎ আজমেরী গ্লোরী নামক কোম্পানীর বাস চালাক। ঘাতক বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৬০-৫৬) সে আনুমানিক ২ বছর যাবৎ চালিয়ে আসছে। সেও একসময় হেলপার ছিলো।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত তিন বছর আগে সে ড্রাইভিং লাইসেন্স করেছে বলে জানায়। এছাড়া মালিক এর কাছ থেকে দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ টাকা হারে ভাড়ায় চালানো শুরু করে বাস। গত ২০ জানুয়ারি ৪ টার সময় যথারীতি বাস নিয়ে সদরঘাট থেকে গাজীপুর চন্দ্রার উদ্দেশ্যে রওনা হলে এই ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার আসামী মো. ইমরান এর বিরুদ্ধে এর আগে ২০২১ সালে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত