ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রথম দফায় ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার হিমসাগর

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২২, ১৯:৩৯

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রথম দফায় ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার হিমসাগর
ছবি: প্রতিনিধি

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ বছরও ইউরোপে যেতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার বিষমুক্ত হিমসাগর আম। বৃহস্পতিবার কলারোয়া উপজেলার কেরেলকাতা ইউনিয়নের ইলিশপুর গ্রামের কৃষক কবিরুল ইসলাম ডাবলুর বাগান থেকে ২ টন আম জিআই ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির মাধ্যমে ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়।

বেলা ১১টার দিকে এই আম রপ্তানির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হুমায়ন কবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামসহ উপজেলা প্রশাসনের অনান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

এ বছর ফলন কম হলেও বাজার দরে খুশি আমচাষিরা। আবহাওয়ার আর মাটির গুনাগুণের কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগেভাগেই পাকে। সে কারণে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আনুষ্ঠানিকতায় ৫ মে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, খিরসরাই, বৈশাখীসহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিপক্ত নিরাপদ আম পাড়া শুরু হয়। আর ১৬ মে থেকে পাড়া শুরু হয়েছে হিমসাগর আম।

এই হিমসাগর আমের রাজধানী ঢাকাসহ দেশে ও বিদেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা। আগামি ১ জুন থেকে গাছ থেকে শুরু হবে আমের রাজা ল্যাংড়া আম ভাংগা। এ বছও সাতক্ষীরা বিশ্বমুক্ত সুস্বাদু নিরাপদ মোট ১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে ইউরোপের বাজারে। বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ২ টন আম ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়েছে। কলারোয়া উপজেলার ইলিশপুর গ্রামের কৃষক কবিরুল ইসলাম ডাবলুর বাগান থেকে উৎপাদিত এই নিরাপদ আম সাত সুমদ্র তের নদী পেরিয়ে ইউরোপের বাজারে যাচ্ছে।

কৃষক ডাবলু জানান, প্রতি বছর তিনি বিশমুক্ত নিরাপদ আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি করেন। এ বছর তিনি ২ হেক্টর জমিতে হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ ও ল্যাংড়া আমের আবাদ করেছেন। মৌসুমের শুরুতেই বৈরী আবহাওয়া ঝড় ও বৃষ্টির কারণে আমের মুকুল ঝরে যায়। যার ফলে আম উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তার। তবে বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় খুশি তিনি। জি আই ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানি প্রথম দফায় তার বাগান থেকে ৩৭০০ টাকা মণ দরে ২ টন হিমসাগর আম ইউরোপে রপ্তানির জন্য ক্রয় করেছে।

তার বাগান থেকে পর্যায়ক্রমে গোবিন্দভোগ ও ল্যাংড়া আম জার্মান, ফ্রান্স, ইতালিসহ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সাতক্ষীরার সুলতানপুরের বড় বাজারে গোপালভোগ, হিমসাগর ও গবিন্দভোগ আম ৫০, ৫৫ ও ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি বিভিন্ন প্রজাতির আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের আম বাগান থেকে সকাল থেকে ভ্যানসহ বিভিন্ন পরিবহনযোগে সাতক্ষীরার বড় বাজারে আসতে শুরু করে হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাই, বৈশাখীসহ নানা জাতের আম। ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বড় বড় আম ব্যবসায়ীরা এখান থেকে স্বল্প মূল্যে আম কিনে ট্রাক যোগে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলা শহরে। বড়বাজার আমের আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি মণ গাবিন্দভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ২১০০ থেকে ২৩০০ টাকা দরে। গোপালভোগ ও খিরসরাই আম বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ২১০০ টাকা মণ দরে। আর দেশি আম বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুরুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এ বছর প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরা থেকে হিমসাগর আম ইউরোপে রপ্তানি শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে গোবিন্দভোগ, ন্যাংড়া ও আম্রপালি মিলে মোট ১শ’ মেট্রিক টন আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি হবে। ১৯ মে প্রথম দফায় জি আই ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড ২ টন হিমসাগর আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানির জন্য নিয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত