ঢাকা, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘আমাদের অবস্থা ভয়াবহ, মাঝ নদীতে আটকে গেছি, প্রচুর বৃষ্টি, আমাদের বাঁচান’

  ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২২, ০২:২৭

‘আমাদের অবস্থা ভয়াবহ, মাঝ নদীতে আটকে গেছি, প্রচুর বৃষ্টি, আমাদের বাঁচান’

সুনামগঞ্জের চলমান বন্যায় আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেই ২১ শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০০ জন যাত্রী নিয়ে সিলেটগামী একটি লঞ্চ মাঝনদীতে আটকা পড়েছে। আটকা পড়া অবস্থা থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী।

সিলেটের দিকে আসার সময় ‘কপোতাক্ষ-অনির্বাণ’ নামের লঞ্চটি সুরমা নদীর মাঝামাঝি পৌঁছানোর পর ইঞ্জিন অকেজো হয়ে থেমে যায়। ফলে ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০০ যাত্রী মাঝ নদীতে আটকা পড়েন।

জানা যায়, নদীতে তীব্র স্রোত আছে এবং বৃষ্টিও হচ্ছে বলে তারা আতঙ্কে আছেন। তারা জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দিয়ে প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছেন। তাদের ফোনে চার্জ না থাকায় এবং নেটওয়ার্ক না থাকায় তারা অ‌নেক আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছেন।

ঘটনাস্থল থেকে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে ঢাবির ৩৭ শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০০ জন যাত্রী নিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে কপোতাক্ষ-অনির্বাণ লঞ্চটি সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। কিন্তু, সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর দুয়ারাবাজার এলাকায় এলে লঞ্চটির ৩টি ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। পরে লঞ্চটি নদীর মাঝখানে আটকা পড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নদীতে তীব্র স্রোত আছে এবং বৃষ্টি হচ্ছে। লঞ্চটি এখানেই থেমে আছে। আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। এখানের বেশিরভাগ যাত্রী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। আমরা প্রশাসনের কাছে আমাদের উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছি। আমরা ৯৯৯-এ কল করে জানিয়েছি। কিন্তু তেমন সাড়া পাইনি। দুয়ারাবাজারের কাছে একটি থানা আছে। আমার ওই থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। এই থানা থেকে চেষ্টা করলে উদ্ধার করা সহজ হত।’

একই বিভাগের আরেকজন শিক্ষার্থী মাহিন আন নূর আটকা পড়া অবস্থা থেকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে তার বন্ধুর ফোনে একটি ম্যাসেজ করে বাঁচার আকুতি জানান।

ম্যাসেজে তিনি লিখেন, ‘আমাদের অবস্থা ভয়াবহ। মাঝ নদীতে আটকে গেছি। প্রচুর বৃষ্টি, আমাদের বাঁচান। আমরা সুনামগঞ্জ দুয়াড়া বাজার থানার আশেপাশে ইউ লুপে। এটা ফেসবুকে পোস্ট দেন ভাই দ্রুত।।।। নেটওয়ার্ক নাই এখানে.. Don't call me -- Mahin”

এ বিষয়ে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহম্মদ বলেন, ‘আমি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। তিনি সুনামগঞ্জে থাকা সেনাবাহিনীর টিমকে জানিয়েছেন। সেখানকার সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।’

এর আগে গত ১৪ জুন রাতে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জ গিয়ে ১৫ জুন দিনের বেলা ঘোরাঘুরি করেন তারা। তারপর পানি বাড়লে সেখানে তারা আটকা পড়ে যান। পরবর্তী সময়ে তারা একটি ট্রলারের করে সুনামগঞ্জ শহরে পৌঁছান এবং পানসী রেস্টুরেন্টে অবস্থান নেন। সেখানে খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি বিদ্যুৎ, ফোনে চার্জ ও নেটওয়ার্ক না থাকায় আতঙ্কিত অবস্থায় ছিলেন তারা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটকে পড়া শিক্ষার্থী এবং সুনামগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে আনার ব্যবস্থা করেন। সুনামগঞ্জ থেকে তাদের সিলেট পাঠিয়ে দেয়ার কথা ছিল।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত