ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সিলেটে বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সংকট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২২, ১৩:৪১

সিলেটে বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সংকট
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট বিভাগজুড়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সংকটের পাশাপাশি স্যানিটেশন সমস্যা দেখা দিয়েছে। বয়স্ক, নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে।

তবে স্বস্তির বিষয় হলো বৃষ্টি থেমেছে। একই সঙ্গে বন্যার পানি কিছুটা কমেছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারকাজ অব্যাহত রেখেছে।

ট্রেন চলাচল শুরু হলেও এখনো বন্ধ রয়েছে বিমান চলাচল। সিলেট নগরীর কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও বুধবার থেকে পুরো সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

বন্যার পানি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। আঞ্চলিক মহাসড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানিতে ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

দুর্ভোগের শিকার মানুষের একটি অংশ আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ আশ্রয়ে ঠাঁই পেলেও পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্রের অভাবে অধিকাংশ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে, আশ্রয়ের জন্য সর্বত্র হাহাকার দেখা দিয়েছে। কিছু এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। তবে বন্যাদুর্গতদের দাবি-চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন না। সরকারিভাবে যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে অনেক মানুষ অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে। মানুষের সঙ্গে রয়েছে গরু-ছাগলও।

পাড়ুয়া, ভোলাগঞ্জ, কলাবাড়ি ও বালুচর আশ্রয়কেন্দ্রে অসংখ্য মানুষ গাদাগাদি করে অবস্থান করছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা তাদের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো ত্রাণসহায়তা পৌঁছেনি। বন্যাকবলিত এলাকায় পয়োনিষ্কাশনেরও সমস্যা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

কেবল কোম্পানীগঞ্জ নয়, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাটসহ সব এলাকায় খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জের হাইটেক পার্ক এলাকায় প্রায় দুই হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

গতকাল বিকালে সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, ৪৯৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ জন মানুষ অবস্থান করছে। এছাড়া রয়েছে ৩১ হাজার গবাদিপশু। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে চারটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর ১৩টি ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। ৬০ বোট নিয়ে উদ্ধার ও সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। সুনামগঞ্জেও নৌবাহিনীর ১০০ সদস্য কার্যক্রম শুরু করেছে। বন্যার্তদের উদ্ধারে সিলেট ও সুনামগঞ্জে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনীও কাজ শুরু করেছে। এছাড়া বিমান বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টারও উদ্ধারকাজে যুক্ত হয়েছে। ৩৫ জনের একটি ডুবুরি দল কাজ করছে। ৬০ জনের আরেকটি বড় দল এসেছে। কোস্টগার্ডের দুটি ক্রুজ শনিবার দুপুরের পর উদ্ধারকাজে যুক্ত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রোববার বিকেলের বুলেটিনে জানানো হয়, সুরমা নদীর সিলেট ও কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, আপাতত শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। কারণ সবকটা গুদামে পানি ঢুকেছে। ফলে চাল গুদাম থেকে বের করা যাচ্ছে না। পানি নামা সাপেক্ষে চাল পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত