ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

গোপালগঞ্জে কোরবানির হাট কাঁপাবে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়

  গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২২, ১০:০৬

গোপালগঞ্জে কোরবানির হাট কাঁপাবে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়
ছবি: প্রতিনিধি

টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়। নাম শুনলেই চমকে উঠবে যে কেউ। মনে হবে কেউ যেন শাসন করতে আসছে। এই নামের গরুগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে গোপালগঞ্জের কোরবানির হাট কাঁপাতে। নামের সাথে সাথে এ গরুগুলোর আকার ও আকৃতিরও মিল রয়েছে। ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় এ গরুগুলো থাকবে বলে মনে করছেন খামার মালিক গিয়াস উদ্দিন।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ব্যাংকের চাকরী ছেড়ে ২০১৮ সালে মাত্র ৪টি ফিজিয়ান জাতের বকনা গরু দিয়ে অগ্র ডেইরি ফার্মের যাত্রা শুরু করেন। এখন তার এ ফার্মে গরু সংখ্যা ৯০টি। এবারের কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় নামে ৪টি গরু প্রস্তুত করেছেন তিনি। আগামী কোরবানীতে তিনি ৮টি গরু প্রস্তুত করবেন বল জানান। আর এবার তার নিজস্ব খামারে প্রস্তুত এই ৪টি গরু কোরবানির হাট কাঁপাবে। প্রায় ৩০ মন ওজনের টাইগার ও দুরন্তের দাম হেকেছেন ৮ লাখ টাকা করে আর প্রায় ২৮ মন ওজনের রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়ের দাম সাড়ে ৬ লাখ টাকা করে । এই গরুগুলো দেখতে প্রতিনিয়ত ভীড় জমাচ্ছে ক্রেতা, পাইকার ও দর্শনার্থীরা।

খামারের কর্মচারী সিরাজগঞ্জের শাহাদতপুর উপজেলার আইয়ুব আলী বলেন, টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় নামের এই চারটি গরুকে কোন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ও ইনজেকশন দেয়া হয়নি। এদের গমের ভুষি, কলাই ভুষি, ধান ভাঙ্গা, ছোলা ভাঙ্গা ও উন্নত জাতের ঘাসসহ দেশীয় খাবার খাইয়ে বড় করা হয়েছে। প্রতিদিন গরুগুলোকে গোসল ও পরিমান মতো খাবার দিতে হয়। তিনিসহ ১২ জন শ্রমিক এই খামারের ৯০ টি গরুর দেখাশুনা ও যত্ন করেন।

স্থানীয় প্রতিবেশী মো. চাঁন মিয়া বলেন, এ খামারে কোরবানি ঈদের জন্য ৪টি ষাড় প্রস্তুত করা হয়েছে। এই ষাড় দেখতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শক, ক্রেতা ও পাইকাররা আসছেন। খামারের মালিক কোন রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই এ ষাড়গুলো বানিয়েছেন। দেখার মতো ষাড় হয়েছে। ষাড়গুলোর জন্য ভাল দাম পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নড়াইল জেলা সদরের আগদিয়া গ্রামের মো. আতাউর রহমান ও খুলনার পাইকগাছা থানার আমীরপুর গ্রামের বিজয় কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, এই খামারে ৪টি বিশালাকৃতির ষাড় আছে শুনে দেখতে এসেছি। সত্যিই দেখে অনেক ভাল লাগলো। এর আগে তিনি এতো বড় ষাড় দেখেননি বলেও জানান।

খামার মালিক গিয়াস উদ্দিনের চাচা আব্দুর রউফ বলেন, তার ভাইয়ের ছেলে এই খামারটি করেছেন। এই খামারে জন্ম হওয়া বাছুর (ষাড়) সে বিক্রি করে দেয়। শুধু বকনা বাছুর রাখেন ও লালন-পালন করে দুধের জন্য। এবার কোরবানী ঈদের জন্য চারটি ষাড় প্রস্তুত করেছে। ষাড়গুলো বেশ বড় এবং ভাল হয়েছে। আশা করছি ভাল দাম পাওয়া যাবে।

অগ্র ডেইরি ফার্মের মালিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, এবারের কোরবানিতে ৪ টি গরু প্রস্তত করেছেন। গরুগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়েছেন টাইগার, দুরন্ত, রাজাবাবু ও ধলাপাহাড়। টাইগার ও দুরন্ত এর ওজন প্রায় ৩০ মন আর রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় এর ওজন প্রায় ২৮ মন করে হবে। টাইগার ও দুরন্তের দাম চেয়েছি ৮ লাখ আর রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে টাইগার ও দুরন্তের দাম উঠেছে ৬ লাখ টাকা করে। তিনি ৭ লাখ টাকা করে দাম পেলে টাইগার ও দুরন্ত বিক্রি করে দিবেন। আর রাজাবাবু ও ধলাপাহাড় ৬ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন।

তিনি আরও বলেন, বেকার যুবকরা যদি এখান থেকে বাছুর নিয়ে কোরবানিকে সামনে রেখে ষাড় প্রস্তুত করে তাহলে তারা লাভবান হবে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। তাই আমি বেকার যুবকদের এখানে আশার আহবান করছি।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. আজিজ আল মামুন বলেন, জেলায় যে সব খামারীরা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ষাড় প্রস্তুত করেছেন তাদের প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামীতেও যারা কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে ষাড় প্রস্তুত করবেন তাদেরও সহযোগিতা করা হবে। এ বছর জেলায় খামার ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩৩ হাজার পশু কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত