ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঐতিহ্য হারাচ্ছে মিরকাদিমের ধবল গরু

  মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২২, ১০:২৭

ঐতিহ্য হারাচ্ছে মিরকাদিমের ধবল গরু
ছবি- প্রতিনিধি

ধবল গরু এই নামটির সাথে মিশে আছে মিরকাদিম নামের একটি জনপদের নাম। বিশেষ করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে ধবল গরুর চাহিদা ছিলো ব্যাপক। কিন্তু কালের বিবর্তনে মিরকাদিমের বিখ্যাত ধবল গরুর ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।

কঠোর পরিশ্রম শেষে কাঙ্খিত লাভ না হওয়ায় সাদা গরুর লালন পালন ও এ ব্যবসা থেকে সরে আসছে মিরকাদিমের ধবল গরু খামারী ও ব্যবসায়ীরা। এতে করে ঐতিহ্যবাহী ধবল গরুর লালনপালন খামার সংখ্যা দুইশ থেকে ১০-১২টিতে নেমে এসেছে। তাও বেশি গরু নেই খামারগুলোতে।

বর্তমানে এসব খামারে ৮ থেকে ১২টি করে গরু রয়েছে যা এক সময়ে শত শত গরু ছিলো। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই দেশী এ ধরনের মানসম্মত গরু উৎপাদন হবে মুন্সীগঞ্জে এমনটিই মনে করছেন খামারীরা।

ধান-চাল আর তেলের কারখানা থাকার কারণে মিরকাদিমের ভূষি, কুড়া, খৈলসহ বিভিন্ন উন্নতমানের গরু খাদ্য খুব সহজে পাওয়া যায়। এখানকার ব্যবসায়ীরা মিরকাদিমের গরুকে মিনিকেট চালের খুদ, এক নাম্বার খৈল, ভাতের মার, সিদ্ধ ভাত, খেসারির ভুষি, গমের ভুষি, বুটের ভুষি খাওয়ান। এছাড়া গরু পালনে প্রশিক্ষিত লোক নিয়োগ করা হতো মিরকাদিমে।

তবে দিন দিন গরুর এই ব্যবসাটিতে এখানকার ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। ভুষি, কুড়া আর খৈলের দাম বৃদ্ধি আর অপ্রতুল হওয়ার তারা হতাশ।

এখানকার এসব গরুর সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ গনিমিয়ার হাটে। যুগ যুগ ধরে এই হাটে মিরকাদিমের বিখ্যাত সব গরু পাওয়া যায়। যা অনেক দামে কিনে নেয় পুরান ঢাকার খানদানি লোকেরা। এছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এই গরু কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে রহমতগঞ্জের গনিমিয়ার হাটে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকে আবার আগেভাগে মিরকাদিমে এসে ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা দিয়ে যায়। পরে ঈদের আগে তাদের গরু বুঝে নেন। কয়েকমাস ধরে লালন পালন করে গরুর মালিককে বুঝিয়ে দেয়ার বিষয়টি বহু আগে থেকেই চালু রয়েছে।

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সবেমাত্র এক সপ্তাহের জন্য ঢাকার রহমতগঞ্জ মাঠে (গনিমিয়ার হাট পুরনো নাম) মীরকাদিমের সাদা গরুর হাট বসে। মিরকাদিমের গরুর কদর ও দাম একটু বেশি। ২ লাক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা গরুর মূল্য হয়ে থাকে।

তবে মিরকাদিমের গরু মুন্সীগঞ্জের কোনো হাটে বিক্রি হয় না। সেখানে ৮মাস দীর্ঘ পরিশ্রম করে লাভবান না হওয়ায় এ ব্যবসা থেকে সরে আসছে মিরকাদিমের ধবল গরু ব্যবসায়ীরা।

ধবল গরুর খামারিরা জানান, একদিকে খামারে জায়গা সংকট অপরদিকে আগের মত ধবল গরু পাওয়া যায়না। ভুষি, কুড়া, খৈলসহ বিভিন্ন উন্নতমানের গরু খাদ্যের দাম বেশি খরচও অনেক । ফলে দিনে দিনে ধবল গরুর খামার কমে যাচ্ছে। সরকার সঠিক সাহায্য সহযোগিতা পেলে ঐতিহ্যবাহী ধবল গরু লালন পালনের ঐতিহ্য আবার ফিরে আসতে পারে বলেও জানান খামারিরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত