ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

যৌতুকের জন্য হাত বেঁধে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করলো স্বামী

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২২, ১৮:০৮

যৌতুকের জন্য হাত বেঁধে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করলো স্বামী
ছবি: প্রতিনিধি

দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় যৌতুকের জন্য এক সন্তানের জননী রেশমা বেগমকে (২৮) শারীরিক নির্যাতনের পর মাথার অর্ধাংশ ন্যাড়া করে দিয়েছে স্বামী। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে তার স্বামী মজিবুর রহমান (৩৬) ও শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার বিকাল ৪টার দিকে তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরল থানার ওসি ফখরুল ইসলাম। বর্তমানে রেশমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার স্বামী মজিবুর রহমান বিরলের কাজিপাড়ার বিলাইমারী গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে।

ভুক্তভোগী বেগম জানান, গত শনিবার দিনগত রাত ১টার দিকে স্বামী ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মধ্যে কথাকাটি হয়। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে আমার শাশুড়ি ও শ্বশুরের আশকারায় স্বামী মজিবুর রহমান আমাকে হাত বেঁধে লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আমার চরিত্র নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করে এবং দুশ্চরিত্রা উল্লেখ করে অপবাদ দেয়।

রেশমা বলেন, প্রতিবাদ করায় শ্বশুর-শাশুড়ির সহযোগিতায় আমার স্বামী বুকের ওপর বসে আমার মাথার চুল অর্ধাংশ ন্যাড়ে করে দেয়। নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়ি।

পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রোববার ভোরে দিনাজপুর বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান মজিদ বলেন, গত এক বছর আগে ঝগড়াঝাটি করে রেশমা বেগম তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি গাইবান্ধায় চলে যায়। গত দুই সপ্তাহ আগে তার স্বামী মজিবুর রহমান আর ঝগড়া বিবাদ করবে না, যৌতুক দাবি করবে না, এমন মুচলেকা দিয়ে তার স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়ি আসার পর ভালোই চলছিল তাদের সংসার। হঠাত করেই গত শনিবার রাতে আবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি-মারামারি, এক পর্যায়ে মাথার চুল কেটে দিয়েছে।

বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আজ ভোরে রেশমা বেগমকে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও তার মাথায় অর্ধাংশ চুল কেটে দেয়া হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে, আরও চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। সে শারীরিক আঘাতের চেয়ে মানসিক আঘাত বেশি পেয়েছে।

ওসি ফখরুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা শোনার পরপরই পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগী নারীর সাথে কথা বলে। তার পাষণ্ড স্বামী মজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রেশমা বেগমের কথা শুনে তার শ্বশুর-শাশুড়িকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৮ বছর আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে গাইবান্ধার বালাসিঘাট এলাকার রেশমা বেগমের সাথে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বাসিন্দা মজিবুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে একজন সন্তানের জম্ম হয়। তাদের সন্তানের বয়স এখন ৬ বছর।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত