ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১১:২৫  
আপডেট :
 ১৩ আগস্ট ২০২২, ১২:০৬

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম
ছবি- প্রতিনিধি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা সবজি, ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের মতে, প্রতিনিয়ত সব ধরণের পণ্যের দাম বাড়ছে। গৃহস্থালির টুকিটাকি পণ্য থেকে শুরু করে দেশি বিদেশি সব ধরণের মালামাল, এমনকি চিকিৎসা সামগ্রী সর্বক্ষেত্রে দামবৃদ্ধি থেকে বাদ পড়ছে না। এক কথায় জ্বালানি তেলের প্রভাব সর্বক্ষেত্রেই পড়ছে।

দোকানিদের তথ্যমতে, ডিজেলের দামবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে তিন-চার দিনের মধ্যে প্রতি ৫০ কেজি চালের বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দাম বেড়েছে। ৫০ কেজির জিরাশাইল বস্তা প্রতি ৩ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫৫০ টাকায়। দেশি বেতি আতপ ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিন দিনের ব্যবধানে বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

এছাড়া খুচরায় প্রতি কেজি জিরাশাইল ৬৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৭ টাকায়। দেশি বেতি ৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকায়, মিনিকেট ৬০ টাকা থেকে ৬৪ টাকায় ও মোটা জাতের নুরজাহার ব্র্যান্ডের ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৩ টাকায়।

গত কয়েক মাস ধরে চিনি ৭৪ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৩ থেকে ৮৪ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে চিনিতে দাম বেড়েছে ৯ থেকে ১০ টাকা। প্রতিকেজি আটা কোম্পানি ভেদে ৫৩ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ টাকায়, ময়দা ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে ৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটা কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা এবং ময়দা কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা।

কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১৫ টাকা বেড়ে কাকরোল ৫৫ টাকা, ঢেড়শ ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, পটল ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, পেঁপে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, বেগুন ১৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, মরিচ ৪০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা, কচুর লতি ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, শসা, চিচিঙ্গা, লাউ, ঝিঙ্গা ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, বরবটি ও তিতকরলা ২০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ পাঁচদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ৬০ টাকা ও টমেটোতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

ব্রয়লার মুরগি কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ টাকা দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। অন্যজাতের মুরগির দাম স্বাভাবিক।

ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ডিম ডজনপ্রতি ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। ডিমের প্রতিডজনে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত।

বাজারের এমন অবস্থায় অসহায় সাধারণ জনগণ। অনেকে বলছেন, নুন আনতে পানতা ফুরিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয় আর বেশি দিন নেই। দেশের অবস্থা খুবই ভয়াবহ হচ্ছে।

বেসরকারি অফিসে কর্মরত মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত তিন বছরে বেতন বাড়েনি। কিন্তু এক সপ্তাহ আগের দর আর আজকের দরের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ টাকা তফাৎ রয়েছে। শুধু পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের দাম বোতলের গায়ে লেখা আছে ৯১০ টাকা। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৯৯৭ টাকায়। ৮৭ টাকা বেড়ে গেছে। মুরগির ক্ষেত্রেও একই। এমন অবস্থায় চলব কেমনে?

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাকে ব্যয় কমাতে হচ্ছে। যেমন আগে প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার আমাদের পরিবারে আমরা গরুর মাংস খেতাম। এখন চার সপ্তাহে একবার খাই।

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর এই কয়েকদিনে প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম গড়ে শতকরা ৩০ ভাগ বেড়েছে। আর এটা সাধারণ মানুষকে চরম সংকটের মধ্যে ফেলেছে। জ্বালানি তেলের দাম যতটা বাড়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি বাড়ছে। সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাই সুযোগ নিচ্ছে, সবজি দোকানদার থেকে শুরু করে সবাই। চাল আমদানির সুযোগ দেয়ার পরও চালের বাজারে সংকট তৈরি করা হয়েছে চাল মজুদ করে। ভোজ্য তেলেও তাই করা হচ্ছে। বাজার মনিটরিং বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত