ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

হঠাৎ বেড়েছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:১৩

হঠাৎ বেড়েছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম নগরীতে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে চোখ ওঠা (কনজাংটিভাইটিস) রোগীর সংখ্যা। প্রতিবছর গ্রীষ্মে এ ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগের দেখা মিললেও এবার শরতে বেড়েছে এর প্রকোপ। চট্টগ্রাম মেডিকেলের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ১০০ রোগী আসছেন চোখ ওঠার চিকিৎসা নিতে।

গত এক সপ্তাহে হাজারের বেশি কনজাংটিভাইটিস আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় দ্রুত পরিবারের অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগই একই পরিবারের সদস্য।

জানা গেছে, চোখ ওঠাকে কনজাংটিভাইটিস বা রেড/পিংক আই বলে। অর্থাৎ কনজাংটিভা নামক চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা রোগ বলা হয়। চোখ ওঠার মূল কারণ ভাইরাসজনিত এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। কারও কারও চোখ ওঠা হয়তো তিনদিনে ভালো হয়ে যায়। আবার অনেকের তিন সপ্তাহও লাগতে পারে। সেটা নির্ভর করে কাকে কোন ধরনের ভাইরাস আক্রান্ত করেছে এবং সেই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন তার ওপর।

নগরের চক্ষু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে সরজমিনে দেখা যায়, চোখ ওঠা রোগীর ভিড়। চোখ ওঠা রোগীর মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী৷ সকালবেলা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীকে চশমা পরে গন্তব্য যেতে দেখা যায়।

কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো— চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। লক্ষণগুলো দেখা গেলেই যেহেতু এটি ছোঁয়াচে রোগ তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। এছাড়া চোখ উঠলে চশমার ব্যবহার করা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা যায়। তবে চোখ ঘষে চুলকানো যাবে না। অন্য কারও আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না, এতে কনজাংটিভাইটিস ছড়াতে পারে। একইসঙ্গে এলার্জিজনিত খাবার পরিহার করতে হবে৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের আরও বেশি সময় লাগতে পারে৷

চট্টগ্রাম জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে এ সময় চোখের রোগবালাই হয়ে থাকে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে চোখ ওঠা। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। কনজাংটিভা বা চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা বলে। এতে রোগীর হাতের বা ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সংস্পর্শে আশপাশের অনেককেই আক্রান্ত করতে পারে।

পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘চোখ ওঠার সমস্যাটি ঋতু পরিবর্তনের সময় হয়ে থাকে। তবে এ বছর এ রোগে আক্রান্ত রোগী প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালেও শত রোগী পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য ভিড় করছে। এটি পুরোপুরি ছোঁয়াচে রোগ। এ থেকে বাঁচতে হলে কালো চশমা ব্যবহারের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শে চলতে হবে। তা না হলে লাভের চেয়ে ক্ষতিও হতে পারে।

এদিকে ভিড় বেড়েছে নগরীর চশমার দোকানগুলোতে। চোখ ওঠায় আক্রান্ত কারও চোখের দিকে তাকালে চোখ ওঠে সাধারণ মানুষের এমন ভ্রান্ত ধারণা ভিড় জমিয়েছে দোকানে দোকানে। এই সুযোগকে পুঁজি করে দোকানিরা ৫০ থেকে ১০০ টাকায় চশমা বিক্রি করছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত