ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভোলায় এবার ধূসর রঙের ডিম পাড়লো পাতিহাঁস!

  ভোলা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৪১  
আপডেট :
 ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৪২

ভোলায় এবার ধূসর রঙের ডিম পাড়লো পাতিহাঁস!
ভোলার চরফ্যাশনে ধূসর রঙয়ের ডিম পেড়েছে পাতিহাঁস। ছবি: প্রতিনিধি

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় পাতিহাঁসের কালো ডিম নিয়ে চাঞ্চল্যের রেশ না কাটতেই এবার দেখা মিলছে ধূসর রঙয়ের ডিমের। শনিবার সকালে চরফ্যাশনের তিনটি বাড়ি থেকে হাঁসের ধূসর রঙয়ের ডিম পাড়ার খবর আসে। তবে দেশি পাতিহাঁসের এমন রংয়ের ডিম হয় না বলে দাবি করছে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা। কেনো এমনটি হচ্ছে তা সঠিক উত্তর জানে না কেউ।

শনিবার সকালে চরফ্যাশন পৌরসভা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামুর বাড়িতে জুলেখা নামের এক গৃহবধূর পালন করা একটি দেশি পাতিহাঁস গত দুইদিন ধরে ধূসর রঙের ডিম দিচ্ছে। একই ওয়ার্ডের মালতিয়া বাড়ির রাফিজ মালতিয়াও জানিয়েছেন তাদের বাড়িতেও একটি হাঁস এ রঙের ডিম দিয়েছে।

এদিকে, চরফ্যাশন পৌরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবু বেপারী বাড়ির বাসিন্দা মো. দুলাল জানান, তার পালন করা একটি পাতিহাঁস গত সাতদিনে ধূসর রঙের সাতটি ডিম দিয়েছে। বিষয়টি তিনি স্বাভাবিক মনে করে কাউকে জানাননি। তবে এখন ফেসবুকে এটি নিয়ে লেখালেখি দেখে তিনিও বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছেন।

অপরদিকে, প্রথমে কালো ডিম দেয়া আব্দুল মতিনের হাসটি দুটি ডিম দেয়ার পর গত দুইদিনে আর কোনো ডিম দেয়নি বলে জানা গেছে। আব্দুল মতিন জানান, তার হাসটি অত্যাধিক মানুষের সমাগমের কারণে অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এ ডিম নিয়ে স্থানীয়দের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এটি উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বা হাঁসের নতুন কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। অনেকে আবার বলছেন, অন্য প্রজাতির পাখির সাথে ক্রসের কারণেও এমনটা ঘটতে পারে।

চরফ্যাশন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু জানান, গত দুইদিন ধরে তাদের বাড়ির পালিত একটি হাঁস ধূসর রঙয়ের ডিম দিয়ে আসছে। এর আগে এমন রঙয়ের ডিম কখনও দেয়নি। এ অস্বাভাবিক ডিম খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কি না তা নিয়ে তারা চিন্তিত।

হাঁসের মালিক গৃহিণী জুলেখা আক্তার জানান, তিনি তিনটি হাঁস লালন-পালন করে আসছেন। সবগুলোর বয়স ৯ মাসের ওপরে। গত শুক্র ও শনিবার একটি হাঁস দুটি ডিম দিয়েছে। সেগুলো স্বাভাবিক ডিমের মতো সাদা নয়, অস্বাভাবিক ও ধূসর রঙের।

এদিকে হাঁসের অস্বাভাবিক রঙের ডিম পাড়ার খবর পেয়ে জুলেখা আক্তারের বাড়িতে ছুটে যান উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা।

চরফ্যাশন উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শংকর কৃষ্ণ দাস জানান, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। এ সকল ঘটনা আশ্চর্যজনক মনে হচ্ছে। কারণ এ ধরনের ঘটনা এর আগে বাংলাদেশে ঘটেনি। এ ডিমগুলো পুরোপুরি কালো না হলেও ধূসর কালো বর্ণের। বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল জানান, প্রথমে গত ২১ সেপ্টেম্বর আব্দুল মতিন নামের একজনের বাড়িতে হাঁসের কালো ডিম দেয়ার খবর পেয়েছেন তারা। এ খবরটি জানার পর বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তবে আজকে (শনিবার) চরফ্যাশনের আরও তিনটি জায়গা থেকে এরকম খবর আসার পর বিষয়টি অনেকটা ক্লিয়ার মনে হচ্ছে, যে কোনোভাবে অন্য কোনো জাতের পাখির সাথে এর পূর্বের কোনো হাঁসের ক্রসিং হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমেরিকার নিউওয়ার্কের স্থানীয় কয়োগা প্রাজাতির হাঁস এ ধরণের ডিম দেয় বলে জানা গেছে। তবে ওই প্রজাতির হাঁস বাংলাদেশে আসে নাই। শীতকালে কয়েকটি প্রজাতির হাঁস আমাদের উপকূলীয় এলাকায় আসে। সে সময়ও কোনোভাবে দেশি জাতের হাঁসের সাথে প্রজনন হতে পারে। তারপরও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত